ফায়ার সার্ভিস প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধিসহ ছয় প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৪৭৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে দুই হাজার দুই কোটি ৩৫ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৪৭২ কোটি ৩০ লাখ টাকা জোগান দেওয়া হবে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলানগরে জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, দেশের নগরায়ন বিবেচনায় উপজেলাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব উপজেলা সদরে হালকা ও মাঝারি ধরনের শিল্প-কারখানা, বেসরকারি বিভিন্ন অফিস ভবন, স্কুল-কলেজ, হাসপাতালসহ নানা ধরনের অবকাঠামো রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং উন্নয়ন মূলত উপজেলা শহরগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। ফলে এখানে জনবসতিও দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সব স্থানের অবকাঠামো ও জনগণের জান-মাল বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অগ্নিকাণ্ড থেকে রক্ষা করার জন্য ফায়ার সার্ভিসের গুরুত্ব অনেক।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নিরাপদ দেশ গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রতি উপজেলায় কমপক্ষে একটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রমের ব্যাপ্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা সদর বা স্থানে ১৫৬টি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন’ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। মূল এই প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় আজকের একনেক সভায় সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা সদর বা স্থানে ১৫৬টি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন’ প্রথম, সংশোধিত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। এর পুরোটাই সরকারের তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হলো সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। নাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী পুণ্যস্নান উৎসবের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১২০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। ভোলা জেলার মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে মনপুরা উপজেলাধীন রামনেওয়াজ লঞ্চঘাট এলাকা এবং তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন থেকে চরফ্যাশন উপজেলাধীন ঘোষেরহাট লঞ্চঘাট এলাকা রক্ষা প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, গাজীপুরের সংযোগ সড়ক প্রশস্তকরণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৯ কোটি দুই লাখ টাকা।