তিন বিদেশী কোম্পানির ছয় মডেলের গাড়ি বিক্রি নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। গতকাল দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গুন হের ঘনিষ্ঠ সহচর ছোয়ে সুন সিলের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছে মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিন। খবর ইয়নহাপ।
স্থানীয় সরকারের অনুমোদন পাওয়ার জন্য প্রতিবেদনে কারসাজি করার অভিযোগে তিন বিদেশী কোম্পানির গাড়ি বিক্রি বন্ধ করছে দেশটি। গতকাল দক্ষিণ কোরিয়ার পরিবেশ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, নিশান, বিএমডব্লিউ ও পোর্শের স্থানীয় ইউনিটের ১০ মডেলের সার্টিফিকেশন দলিলে ত্রুটি শনাক্ত করা গেছে। যেসব মডেলের নথিতে ত্রুটি পাওয়া গেছে, তার মধ্যে ইনফিনিটি কিউ৫০, কাশকাই, এক্স৫এম, মাকান, এস ডিজেল, কাইয়েনে এ ই-হাইব্রিড ও কাইয়েনে টার্বো— এ ছয়টি গাড়ি বর্তমানে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। বাকি চারটি মডেল বিক্রি স্থগিত রয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ভক্সওয়াগানের কার্বন নিঃসরণ জালিয়াতি প্রকাশের পর চলতি বছরের আগস্টে দক্ষিণ কোরিয়ায় গাড়ির সার্টিফিকেশন তদন্ত চালু করা হয়। জার্মানির বিশ্বখ্যাত গাড়ি কোম্পানিটির বিরুদ্ধে স্থানীয় বাজারে বিক্রি বাড়াতে গাড়ির শব্দ স্তর, জ্বালানি সাশ্রয় ও কার্বন নিঃসরণ নিয়ে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোরীয় সরকার ভক্সওয়াগনের সঙ্গে একই দিনে বাকি তিনটি কোম্পানির অভিযোগ শুনানির তারিখ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি মধ্য ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনা করেছে।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রকল্প পেতে বিতর্কিত ছোয়ে সুন সিলের সহযোগিতা নেয়ার কথা অস্বীকার করেছে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী কোম্পানি লকহিড মার্টিন। গতকাল এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে কোম্পানিটি।
কোম্পানির বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যালিন হিউসন কখনই কোরিয়া সফর করেননি এবং কখনই ছোয়ে সুন সিলের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেননি। উল্লেখ্য, ৪০ বছর ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পাক কুন হের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন ছোয়ে সুন সিল। তার বিরুদ্ধে সরকারি সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপসহ অবৈধ সুযোগ গ্রহণের অভিযোগ আনা হয়েছে। চই সুন সিল কনগ্লোমারেটগুলোকে স্থানীয় দুটি ফাউন্ডেশনে অর্থ দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। তদন্তকারীদের সন্দেহ ছোয়ে এসব জায়গা থেকে প্রাপ্ত অর্থ ভোগ করতেন।
এসব অভিযোগ প্রকাশের পর বিরোধদলীয় এক আইনজীবী সামরিক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ছোয়ের সম্পর্ক তদন্ত করে দেখার দাবি তোলেন। এদিকে উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান ক্ষেপণাস্ত্র হুমকির মুখে দক্ষিণ কোরিয়ায় অগ্রসর মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্য টার্মিনাল হাই অল্টিচিউড এরিয়া ডিফেন্স (টিএইচএএডি) স্থাপনের কথা ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে টিএইচএএইড বা এফ-৩৫ নিয়ে কোম্পানির ছোয়ে সুন সিল বা লিন্ডা কিমের সঙ্গে জড়িত থাকার সংবাদ মিথ্যা বলে জানিয়েছে লকহিড মার্টিন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অন্যতম একজন লবিস্ট বলে পরিচিত লিন্ডা কিম, যার সঙ্গে ছোয়ে সুন সিলের সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।