সব দ্বিধাদ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের মুকুট ছিনিয়ে নিলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো নারী প্রেসিডেন্টে হওয়ার সম্ভাবনাকে মিথ্যা করে হোয়াইট হাউজে জায়গা করে নিলেন তিনি।
নির্বাচন যত এগিয়ে এসেছে, নিজের বিবেচনাহীন আচরণ ও মন্তব্যের কারণে ব্যাপকভাবে বিতর্কিত ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের দলের সিনিয়র নেতাদের সমর্থনও হারিয়েছেন। তাই ট্রাম্পের এই জয়কে আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ‘আপসেট’ বা বিপর্যয় বলে অভিহিত করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে জয়ের জন্য একজন প্রার্থীর কমপক্ষে ২৭০টি আসন নিশ্চিত করার কথা। এর মধ্যে ২৭৬টি আসন জয় করে নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে হিলারি পেয়েছেন ২১৮টি আসন।
ভোটগ্রহণ শেষে ভোট গণনার প্রথম দিকে জয়ের পাল্লা হিলারির দিকেই ভারী ছিল। কিন্তু যত সময় গড়াতে থাকে, হিলারির সঙ্গে ট্রাম্পের পক্ষে ভোটের পার্থক্য কমে আসতে থাকে। একসময় সবার ধারণা ভুল করে হিলারিকে সাধারণ ভোটে তো অবশ্যই, এমনকি ইলেকটোরাল ভোটেও ছাড়িয়ে যান এই রিপাবলিকান প্রার্থী।
অবশ্য ভোট গণনার প্রাথমিক অবস্থা দেখেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো ভবিষ্যদ্বাণী করে যে, ট্রাম্পেরই এবার জয়ের সম্ভাবনা বেশি। সেই ভবিষ্যদ্বাণীই সত্যি করলেন অভিবাসী, মুসলিম, ও নারীসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনায় থাকা শত কোটিপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের জয়ের মধ্য দিয়ে এক দিক দিয়ে মতামত জরিপের ফলাফল ভুল – ট্রাম্পের এমন দাবি সত্যি হলো। প্রচারণার শেষদিন পর্যন্ত ট্রাম্প জোরগলায় বলেছেন, জরিপে যা-ই বলা হোক না কেন, নির্বাচনে তিনিই জিতবেন এবং হিলারিকে ব্যাপক ভোটে ‘উড়িয়ে’ দেবেন।
এছাড়া তিনি বলেছেন, গণমাধ্যম তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ গণমাধ্যম ট্রাম্পের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অনেকটা ঘোষণা দিয়েই তার বিরুদ্ধে জনগণকে উৎসাহিত করছিল। কিন্তু তবুও জিতে গেলেন ট্রাম্প।
আবার এর ফলে ট্রাম্পের কিছু অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণেরও সুযোগ রয়েছে। ট্রাম্প বলেছিলেন, দেশের ‘ত্রুটিপূর্ণ’ রাজনৈতিক ব্যবস্থা তার বিরুদ্ধে ‘কারচুপি’ করছে, যেন তিনি প্রেসিডেন্ট হতে না পারেন। কিন্তু এই ‘ত্রুটিপূর্ণ’ ব্যবস্থাই ট্রাম্পকে জয়ী করে দিলো।