Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

gdpদেশের ইতিহাসে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার প্রথমবারের মতো ৭ শতাংশ অতিক্রম করেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে বাংলাদেশে মোট দেশজ উত্পাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ, যা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) আগের প্রাক্কলনের চেয়ে বেশি।

গত অর্থবছরের নয় মাসের (জুলাই-মার্চ) তথ্য বিশ্লেষণ করে বিবিএস বলেছিল, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে। আর একই সময়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বিশ্বব্যাংক ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। যদিও চূড়ান্ত হিসাবে তাদের এসব পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গেছে প্রবৃদ্ধির হার।

chardike-ad

গতকাল পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের অর্থনৈতিক বিভাগে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে গত অর্থবছরের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ তথ্যমতে, দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রবৃদ্ধির এ খবর শোনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, এটি অর্জন সম্ভব হয়েছে দেশের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের অবদানের ফলেই। সবাই মিলে কাজ করলে দারিদ্র্য জয়ের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছা সম্ভব।’

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এ সময়ের মধ্যে বিশ্বের যতগুলো দেশ প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে ধরে রাখতে পেরেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বর্তমানে দেশে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরও আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

বিবিএসের তথ্য বিশ্লেণে দেখা যায়, গত অর্থবছরে সেবা ও শিল্প খাতের ওপর ভর করে প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে। শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক শূন্য ৯, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২৫, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। তবে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কমেছে। এ খাতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও গত অর্থবছরে তা কমে হয়েছে ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

বিবিএসের তথ্যমতে, ২০১১-১২ অর্থবছরে দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির হার ২০১২-১৩ অর্থবছরে ছিল ৬ দশমিক শূন্য ১ ও ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। ২০১৫-১৬ বছরে জিডিপির আকারও বেড়েছে। টাকার অংকে তা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৩ কোটি, যা আগের অর্থবছরে ছিল ১৫ লাখ ১৫ হাজার ৮০২ কোটি টাকা।

এর আগে জুলাই-মার্চ পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে বিবিএস ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করলেও চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশার কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করে সরকার।

এদিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়লেও গত অর্থবছরে মাথাপিছু আয় হয়েছে ১ হাজার ৪৬৫ ডলার, যা প্রাক্কলন থেকে ১ ডলার কম। ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার অবনমনের কারণে গত মে মাসের প্রাক্কলন থেকে চূড়ান্ত হিসাবে মাথাপিছু আয় কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গত মে মাসে প্রতি ডলারের বিনিময়ে যেখানে ৭৮ টাকা ১৫ পয়সা পাওয়া যেত, চূড়ান্ত হিসাবের সময় তা হয় ৭৮ টাকা ২৭ পয়সা।