চীনের খ্যাতির উপকরণ অনেক। এখানে জন্মেছেন মহান দার্শনিক কনুফুসিয়াস, পিকিংপন্থী সমাজতন্ত্রের জনক মাও সেতুং, পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্য চীনের মহাপ্রাচীর।
বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশও চীন। ভৌগোলিক সীমারেখা ও আয়তনের বিশালতা, বর্তমান বিশ্বের উদীয়মান অর্থনৈতিক পরাশক্তি, সমাজতন্ত্রের ধারক ও বাহক বিশেষণেও বিশেষিত করা যায় চীনকে।
তবে এই দেশে আছে আরো অজানা কিছু আছে। আছে রহস্যময় এক গ্রাম। চীনের সবচেয়ে ধনীদের বাস এই গ্রামে। গ্রামটির নাম হুয়াশি। এটি কমিউনিস্ট আদর্শে বিশ্বাসীদের স্বর্গরাজ্য হিসেবেও পরিচিত।
কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সেক্রেটারি উ রেনাবু ১৯৬১ সালে গ্রামটি প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে তখন দ্ররিদ্র চাষী সম্প্রদায় বাস করতো। কিন্তু এখন অবস্থা পুরোপুরি পাল্টে গেছে। জাহাজ ও ইস্পাতের ব্যবসায়ীরা এখন থাকেন এখানে। একদা গরীব গ্রামের বাসিন্দারা এখন বিলিয়নেয়ার।
২৪০ একর আয়তনের গ্রামটিতে দুই হাজার মানুষের বাস। বাসিন্দারা সবাই বিনামূল্যে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সংক্রান্ত সব ধরনের সহায়তা পেয়ে থাকেন। সঙ্গে বিলাসবহুল গাড়ি-বাড়ি তো আছেই। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সব সময় কমপক্ষে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার (প্রায় দুই কোটি টাকা) ডিপোজিট থাকে।
এ গ্রামে জুয়া ও নেশা জাতীয় দ্রব্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সপ্তাহের সাতদিনই কাজ করতে হয়।
কেউ যদি একবার গ্রাম ছেড়ে চলে যায় তবে তাকে সুযোগ সুবিধা এবং সম্পদও ছেড়ে যেতে হয়। এ গ্রামের বাইরে সম্পদ স্থানান্তর বা ব্যবহারের ও কোনো সুযোগ নেই। ছেড়ে যাওয়া সম্পদের মালিকানা চলে যায় গ্রামবাসীর যৌথ মালিকানায়।
২০১১ সালে বাসিন্দারা সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেন। ওই বছর ৩২৮ মিটার উঁচু এক গগনচুম্বী অট্টালিকার উদ্বোধন করা হয়। এখানে শুধু গ্রামটির নিবন্ধিত বাসিন্দারা বসবাস করতে পারবে। ২০১৬ সালে ৫৫ বছরে পদার্পণ করলো ধনীদের গ্রাম হুয়াশি।
তবে বাসিন্দাদের গণমাধ্যমে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা আছে। সত্যিই আজব এক গ্রাম! প্রাচুর্য আছে, সমৃদ্ধি আছে, কিন্তু সবকিছুই নিয়ন্ত্রিত।
সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার