মাইক্রোসফট, গুগলসহ ৫০টির বেশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান শরণার্থী সাহায্যার্থে ৬৫ কোটি ডলার অনুদান দেয়ার অঙ্গীকার করেছে। এ অর্থ ২০টি দেশের শিশুসহ ৬৩ লাখ শরণার্থীর শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের জন্য ব্যয় করা হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সম্প্রতি শরণার্থী-বিষয়ক জাতিসংঘ নেতাদের এক সম্মেলনে বিষয়টি তুলে ধরেন। খবর পিটিআই।
বৈশ্বিক সংকটে পরিণত হয়েছে শরণার্থী সমস্যা। গৃহযুদ্ধ, হিংসা, হানাহানি ও নানা বৈষম্যের কারণে দিনকে দিন বিদ্যমান সমস্যা প্রকট হচ্ছে। বিশ্ব রাজনীতি ক্রমবর্ধমান এ সমস্যা মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবার তাই সহায়তার হাত বাড়াল প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো।
ওবামা বলেন, সরকারের একটি উদ্যোগের আওতায় মাইক্রোসফট, ট্রিপঅ্যাডভাইজার, এইচপি এবং গুগলসহ আরো ৪৭টি প্রতিষ্ঠান ৮০ হাজারের বেশি শরণার্থী শিশুর শিক্ষা-বিষয়ক সহায়তা দেবে। অ্যাকসেঞ্চার, ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন এবং লিংকডইনের মতো আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান শরণার্থীদের জন্য ইন্টার্নশিপ, দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে। সাম্প্রতিক এ অঙ্গীকারের অর্থ হলো— আমরা ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি শরণার্থীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি। অর্থাত্ ২০টি দেশের প্রায় ৬৩ লাখ শরণার্থীর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কাজের ব্যবস্থা করতে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ, অনুদান এবং প্রয়োজনে অর্থ সংগ্রহ করবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ নাগরিকদের খুঁজে বের করা এবং তাদের কাজে লাগাতে শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর এ উদ্যোগ একটি অসাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী শুধু ২০১৫ সালেই সংঘাত ও নিপীড়নের কারণে বাধ্য হয়ে ৬ কোটি ৫৩ লাখ মানুষ গৃহহীন ও দেশান্তরী হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই সবচেয়ে বড় ধরনের স্থানান্তরিত হওয়ার ঘটনা। ওবামা বলেন, গৃহহীন বিপুল সংখ্যক মানুষের মধ্যে ২ কোটি ১৩ লাখ শরণার্থী হিসাবে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন দেশে। বিশেষ করে, ১০টি দেশে শরণার্থী সমস্যা বড় ধরনের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হোয়াইট হাউজ গত জুনে একটি উদ্যোগ ঘোষণা করেছিল। বারাক ওবামা গৃহীত ওই উদ্যোগের লক্ষ্য ছিল— বৈশ্বিক শরণার্থী সমস্যা মোকাবেলায় ব্যক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে সহায়তার আহ্বান জানানো হয়। উদ্যোগটিকে সমর্থন জানিয়ে ওই সময়ই ১৫টি প্রতিষ্ঠান স্বাক্ষর করে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানের এ সংখ্যা বেড়ে ৫১তে দাঁড়িয়েছে।