বিশ্বজুড়ে সহিংসতার মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। নানাভাবে মানবতাকে ধ্বংস করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর সর্বশেষ নিদর্শন ফ্রান্সের নিসে। গতকাল দেশটির জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে হাজির হওয়া মানুষের ভিড়ে গাড়ি হামলা চালানো হয়। এতে নিহত হয়েছেন ৮৪ জন। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তবে সহিংসতায় গাড়ির ব্যবহার নতুন কৌশল নয়, এ সম্পর্কে ইন্টেলিজেন্স সংস্থাগুলো ওয়াকিবহাল।
গত বছরের অক্টোবরের পর ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন অঞ্চলে বেশ কয়েকটি গাড়ি হামলা চালানো হয়। এতে ২১৫ জন ফিলিস্তিনি, ৩৪ জন ইসরায়েলি, দুজন আমেরিকান, একজন ইরিত্রিয়ান ও একজন সুদানিজ নিহত হন। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পশ্চিমা কর্তৃপক্ষকে একই ধরনের তিনটি হামলা মোকাবেলা করতে হয়েছে, যার দুটি ব্রিটেনে ও একটি কানাডায় সংঘটিত হয়েছে।
২০১৩ সালের মে মাসে লন্ডনে গাড়ি হামলা হয়। এতে লি রিগবি নামে একজন ব্রিটিশ সৈন্য নিহত হন। এর ১৮ মাস পর কানাডায় আরেকটি গাড়ি হামলা হয়। এ ঘটনায় প্যাট্রিস ভিনসেন্ট নামে একজন কানাডিয়ান সৈন্য নিহত ও অপর একজন আহত হন। এর কিছুকাল পরে ২০১৪ সালের অক্টোবরে ফ্রান্সের কুইবেকে একটি গাড়ি আক্রমণের ঘটনা ঘটে।
সাম্প্রতিক সময়ের আগেও আক্রমণের মাধ্যম হিসেবে গাড়ি ব্যবহূত হয়েছে। ২০০৭ সালের জুনে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো বিমানবন্দরে আক্রমণের মাধ্যম হিসেবে গাড়ি ব্যবহার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত একজনকে শাস্তিস্বরূপ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে সে দেশের আদালত।
১৯৯৮ সালে পূর্ব আফ্রিকার দেশ তাঞ্জানিয়া ও কেনিয়ার দুটি শহরে গাড়ি হামলা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। সে সময় তাঞ্জানিয়ার দার এস সালাম ও কেনিয়ার নাইরোবিতে গাড়ি বোমা হামলায় ২০০ জন নিহত হন।
চলতি মাসের শুরুতেই ইরাকের রাজধানী বাগদাদে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি গাড়ি হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে ৪ জুলাইয়ের হামলায় ২০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিয়তই ইরাক, তুরস্ক, সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের নৃশংস হামলা চালানো হচ্ছে। আর এসব ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন বহু নিরপরাধ নারী, পুরুষ ও শিশু।
নৃশংস ঘটনার ভয়াবহতা কাটিয়ে শান্তি জাগ্রত হোক—এ মুহূর্তে বিশ্ববাসীর সবচেয়ে বড় প্রার্থনা এটি।