অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে রাজধানীর পাঁচতারকা ও অভিজাত হোটেলগুলোয়। নিরাপত্তার স্বার্থে রুম সার্ভিস ছাড়া আনুষঙ্গিক অন্যান্য সেবা বন্ধ করে দিয়েছে এসব হোটেল। বিদেশী অতিথিদের বুকিং নেয়া হলেও বন্ধ রাখা হয়েছে বাংলাদেশী অতিথিদের রুম বুকিং। সম্প্রতি গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার পর নিরাপত্তার কারণে এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষগুলো।
গতকাল রাজধানী গুলশান ও বনানী এলাকার অভিজাত হোটেলগুলোয় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি হোটেলের সামনেই থমথমে পরিস্থিতি। আশপাশের রাস্তাগুলোয় গাড়ি চলাচল সীমিত করার পাশাপাশি বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি। বিমানবন্দর সড়কে অবস্থিত র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলের সব কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে র্যাডিসনের মূল গেটও বন্ধ রাখতে দেখা যায়।
এ প্রসঙ্গে র্যাডিসনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মকর্তা আবদুল খালেক বণিক বার্তাকে বলেন, গতকাল দুপুরের পর থেকেই আমাদের সব সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নতুন করে কোনো অতিথির বুকিং নেয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি আগে থেকে যারা আছেন, তারাও বাইরের গাড়ি নিয়ে হোটেলে প্রবেশ করতে পারছেন না। নিরাপত্তার স্বার্থে হোটেলের গেট থেকে র্যাডিসনের নিজস্ব গাড়ি দিয়ে অতিথিদের ভেতরে নিয়ে আসা হচ্ছে।
এদিকে রুম সার্ভিস ছাড়া গতকাল দুপুর থেকে গুলশানের লেকশোর হোটেলে সব ধরনের সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। হোটেলের বাইরে এ-সংক্রান্ত একটি নোটিসও টানিয়েছে লেকশোর কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষ জানায়, বন্ধ হওয়া সার্ভিসগুলোর মধ্যে রয়েছে রেস্টুরেন্ট ও হল বুকিং। লেকশোরের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সেলিম জানান, গুলশানের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর কয়েকটি সার্ভিস বন্ধ ছিল। তবে গতকাল থেকে সব ধরনের সেবাই বন্ধ।
গুলশানের পাঁচতারকা হোটেল ওয়েস্টিনে গিয়ে দেখা যায়, হোটেলের পাশের রাস্তা বন্ধ। হোটেলের সামনে কোনো গাড়ি অবস্থান করতে দেয়া হচ্ছে না।
যদিও গতকাল হোটেলটির লাগেজ স্ক্যানিং মেশিনটি অকার্যকর ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে হোটেলে আসা বিদেশী অতিথিদের লাগেজ খুলে সনাতনী পদ্ধতিতে পরীক্ষা করেন নিরাপত্তাকর্মীরা। কবে নাগাদ স্ক্যানিং মেশিন ঠিক হবে, সে বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি ওয়েস্টিন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বাতিল হয়ে গেছে পর্যটন নগরী সিলেটে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের অগ্রিম বুকিং। সিলেটের হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা আশা করেছিলেন, ২০১৬ পর্যটনবর্ষে তারা কিছুটা লাভের মুখ দেখবেন। এ বছর রাজনৈতিক হাঙ্গামাও নেই। কিন্তু গুলশানের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ভেস্তে গেছে সব।
এ প্রসঙ্গে সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্টহাউজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তাহমিন আহমদ বলেন, সিলেটের বেশির ভাগ হোটেল-মোটেলের অধিকাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গিয়েছিল। তবে গুলশানে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে দেশী পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটকরাও একে একে বুকিং বাতিল করছেন।