Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

Gulshan-Hamla-8গুলশানে হামলার দু’দিন পর হামলাকারীদের সংখ্যা নিয়ে গরমিল দেখা দিয়েছে।

আইএসপিআর বলেছে, “হলি আর্টিজান বেকারিতে কমান্ডো অভিযানের সময় ৬ জন হামলাকারীকে হত্যা করা হয়। গ্রেফতার করা হয় সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে।”

chardike-ad

কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে ছবি প্রকাশ করা হয়েছে পাঁচজন হামলাকারীর মরদেহের।

শনিবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি নিহত পাঁচ জঙ্গির মৃতদেহের ছবি এবং তাদের সংক্ষিপ্ত নামগুলো প্রকাশ করে।

নামগুলো হলো- আকাশ, বিকাশ, ডন, বাধন ও রিপন। তবে মৃতদেহগুলোর কোনটি কার সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়া হয়নি।

এর আগে ইসলামিক স্টেটের পক্ষ থেকে জিহাদিদের যেসব ছবি ছাড়া হয়েছে তাদের সংখ্যাও ছিল ৫।

এই গরমিলের বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারের কাছ থেকে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোমগ্রোউন জঙ্গি

হামলাকারীদের অভ্যন্তরীণ জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য বলা হলেও তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনো জঙ্গি সংগঠনের যোগসূত্র এখনো পাওয়া যায়নি বলে দাবি করছে সরকার।

ঢাকায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, তাদের জানামতে হামলাকারীদের সবাই দেশীয় জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য।

“এরা সবই হোমগ্রোউন জঙ্গি। দেশেই এদের উৎপত্তি এবং দেশের লোকজনের পরামর্শেই এরা কাজ করছে,” বলেন তিনি।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক যোগসূত্রের বিষয়টি প্রমাণিত নয় বলা হলেও, হামলা চলাকালে আইএসের বার্তা সংস্থা বলে পরিচিত আমাক থেকে নিহতদের কিছু ছবি এবং নিহতের সঠিক সংখ্যাও প্রকাশ করা হয়।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, “এই তথ্যগুলোও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া তারা গ্রহণ করবেন না।”

“আমাদের ধারণা এটা আইএসের ওয়েব পোর্টাল থেকে নয়, আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলতে পারবো। তবে আমরা সাংগঠনিকভাবে আইএস, তালেবান বা আল কায়দার সঙ্গে কোনো যোগসূত্র পাইনি,” বলেন তথ্যমন্ত্রী।

চলছে আলামত সংগ্রহ

এদিকে গুলশানের রেস্টুরেন্টে হামলার পর দ্বিতীয় দিনে ঘটনাস্থল ঘিরে দিনভর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা দেখা গেছে।

পুলিশের বিভিন্ন সংস্থা ও তদন্তকারী দল হেলি আর্টিজান বেকারিতে উপস্থিত হয়ে আলামত সংগ্রহ করেছেন।

এর মধ্যে নিহত জিম্মিদের পরিচয় প্রকাশ হয়েছে এবং হামলায় জড়িতদের সবাই বাংলাদেশী বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

বিকেলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হামলায় যে ৬ জন নিহত হয়েছে তাদের সবাই দেশীয় জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক।

তবে সরকার থেকে ৬ জনের কথা বলা হলেও পুলিশ থেকে নিহত হামলাকারীদের যে ছবি প্রকাশ করা হয়েছে সেখানেও ৫ জনের ছবি রয়েছে এবং তথাকথিত আইএসের বার্তা সংস্থা বলে পরিচিত আমাক থেকেও ৫ জনের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত একজনের বিষয়েও এখনও পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

সামরিক হাসপাতালে এখন তার চিকিৎসা চলছে।

শহীদুল হক বলেন, “তদন্ত হতে দেন। প্রাথমিকভাবে যা পাওয়া গেছে তা বলা হয়েছে।”

তিনি এর আগেই বলেছিলেন যে জঙ্গিরা সবাই পুলিশের তালিকাভুক্ত ছিল।

জঙ্গি গোষ্ঠি আইএস এর আগে এক বার্তায় বলেছিল যে তাদের সঙ্গে জেএমবির সম্পর্ক রয়েছে এবং তারা বাংলাদেশে জেএমবির কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে।

তবে আইএসের সাথে দেশীয় জঙ্গিদের কোন যোগসূত্র কখনোই সরকারের পক্ষ থেকে কখনোই স্বীকার করা হয়নি।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলছেন, “নিজেদের ক্ষমতা নিয়ে বড়াই করার উদ্দেশ্যে হয়তো জেএমবি এ দাবি করে থাকতে পারে।”

সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্য

রোববার বিকেলে এক লিখিত সংবাদ সম্মেলনে গুলশান হামলার বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

সেখানে দল-মত নির্বিশেষে একটি সন্ত্রাস বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

খালেদা জিয়া বলেন, “আমরা যে যাই বলি, আমাদের কিছুই থাকবে না, কোনো অর্জনই টিকবে না যদি আমরা সন্ত্রাস দমন করতে না পারি।” -বিবিসি