যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে স্টাইলিশ স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি লাভে উদগ্রীব হুয়াওয়ে। বিশ্বের বৃহত্ অর্থনীতির দেশটি থেকে নিরাপত্তাহীনতায় চার বছর আগেই নেটওয়ার্ক সুইচিং গিয়ার ব্যবসা তুলে নেয় চীনের এ টেকজায়ান্ট। গত বছর হুয়াওয়ের মিলেছে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ স্মার্টফোন বিক্রেতার তকমা। এছাড়া ওই সময় চীনের বাজারে অ্যাপলকেও ছাড়িয়ে গেছে তারা। চলতি বছর নতুন ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন পি৯ উন্মোচন করে অ্যাপল স্যামসাংয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতাকে আরো সুদৃঢ় করে তুলেছে প্রতিষ্ঠানটি।
হুয়াওয়ের তিন প্রধান নির্বাহীর একজন এরিক জু। তিনি এপ্রিলে শিল্প বিশেষজ্ঞদের বৈঠকে বলেছিলেন, ‘চীন এখন হাই-এন্ড ভোক্তা ব্র্যান্ড সৃষ্টি করছে। বিশ্বব্যাপী আমাদের পণ্যের বিস্তার চাই। এ লক্ষ্য পূরণে যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্যই হুয়াওয়েকে সফল হতে হবে। বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ স্মার্টফোনের বাজার এটি।’ বিশেষজ্ঞরা বলেন, স্মার্টফোনের বৈশ্বিক বিক্রির এক-ষষ্ঠাংশ হয় যুক্তরাষ্ট্রে।
পাশাপাশি অন্য বাজার দখলেও গুরুত্ব দিচ্ছে হুয়াওয়ে। পি৯-এর প্রচারণায় প্রতিষ্ঠানটি বেছে নিয়েছে হলিউড তারকা হেনরি ক্যাভিল ও স্কারলেট জোহানসনকে। বাংলাদেশ থেকে মেক্সিকো— প্রচারণা চালাতে সব দেশ থেকেই নির্বাচন করা হচ্ছে তারকা প্রতিনিধি। বাদ পড়েনি জনপ্রিয় ফুটবল দলগুলোও। জার্মান ফটোগ্রাফি পাওয়ার হাউজ লেইকা পি৯-এর ক্যামেরার জন্য কাজ করেছে। হুয়াওয়ের কমিউনিকেশন্স বিভাগের চেয়ারম্যান জয় তান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসার পরিসর বাড়াতে আমরা সহনশীলতার সঙ্গে কাজ করছি। ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টাও রয়েছে। মার্কিন ভোক্তারা হুয়াওয়ের ফোনে আগ্রহী হবেন বলে আশা আমাদের।’
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিসের বিশ্লেষক নিকোল পেং বলেন, বিক্রির প্রবৃদ্ধি চলতি বছর ৩০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য হুয়াওয়ের। মার্কিন মুলুকে এখন এ হার ২ শতাংশের নিচে থাকলেও আগামীতে তা দুই ডিজিটে নিতে হবে। গত বছর প্রতিষ্ঠানটি ৬ হাজার ৮০ কোটি ডলারের পণ্য বিক্রি করে ৫৭০ কোটি ডলার মুনাফায় সক্ষম হয়েছিল। এ পরিমাণ অ্যাপলের বিক্রির এক প্রান্তিকের সমান। আবার গবেষণা ও উন্নয়নে (আরঅ্যান্ডডি) হুয়াওয়ে ৯০০ কোটি ডলার ব্যয় করলেও অ্যাপল করে ৮১০ কোটি ডলার। গত বছর হুয়াওয়ে বিশ্বজুড়ে সরবরাহ করেছে ১০ কোটি ৮০ লাখ ইউনিট হ্যান্ডসেট। এই প্রথম চীনের কোনো প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাপী ১০ কোটির বেশি পণ্য সরবরাহে সক্ষম হয়েছে। হুয়াওয়ের আগের অবস্থানে রয়েছে স্যামসাং ও অ্যাপল। এ সময় স্যামসাং ও অ্যাপল বিশ্বজুড়ে সরবরাহ করে যথাক্রমে ৩২ কোটি ৫০ লাখ ও ২৩ কোটি ১৫ লাখ ইউনিট হ্যান্ডসেট। হুয়াওয়ের ফোন এখন যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হয় কেবল অনলাইনে। কিন্তু এর চাহিদা রয়েছে বেশ, জানান গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনারের বিশেষজ্ঞ তুওং এইচ গুয়েন। হুয়াওয়ে বিলাসবহুল ইমেজ তৈরিরও চেষ্টা করছে। এজন্য তারা চুক্তিবদ্ধ হয় বিলাসবহুল ব্র্যান্ড সরোভস্কির সঙ্গে। এ দুই কোম্পানি যৌথভাবে নারীদের জন্য আনছে ফ্যাশনেবল স্মার্টওয়াচ। বণিক বার্তা।