ভারতের আহমেদাবাদের দাহোদ এলাকার ভাভাড় গ্রাম। এখানেই বাস ভাভর পরিবারের। গ্রামে কারো বাড়িতে অনুষ্ঠান হলে তাদের সপরিবারে নিমন্ত্রণ করতে দ্বিধাবোধ করেন গৃহকর্তা। না‚ জাতপাতের অস্পৃশ্যতা নয়। দ্বিধার কারণ ভাভর পরিবারের সদস্য-সংখ্যা। এই পরিবারের মোট সদস্য ১০০ জন। তাই দাওয়াত-বাড়িতে সপরিবারে? প্রশ্নই ওঠে না।
১০০ জনের পরিবারের গৃহকর্তা হলেন নৃসিংহ ভাভর। তার নিজের ১১ জন সন্তান। ৬ ছেলে এবং ৫ মেয়ে। এদের আবার প্রত্যেকের সন্তান সংখ্যা ১০ ছাড়িয়েছে। ফলে যদি কোনো অনুষ্ঠানে সবাই এক জায়গায় আসেন‚ তাহলে নিজেরাই খেই হারিয়ে ফেলেন। বাচ্চাদের হিসেব রাখাতে রাখতে হিমসিম সবাই।
পরিবার পরিকল্পনা? নৃসিংহ জানিয়েছেন‚ জীবনে এসব কথা শোনেননি। জানেন না‚ সেটি খায়‚ না মাথায় দেয়। কিন্তু এতজন সদস্য কেন? কারণ পুত্রসন্তান চাই। তাই‚ যতদিন না ছেলে হয়েছে‚ সন্তানের জন্য চেষ্টা করে গেছেন এই পরিবারের দম্পতিরা। এবং ছেলে হলেও একটিতে হবে না। একাধিক পুত্রসন্তান চাই।
শুধু এরাই একা নয়। পরিসংখ্যান বলছে‚ গুজরাটের গ্রামীণ অঞ্চলে মোট ৮ হাজার পরিবার আছে‚ যাদের সন্তান সংখ্যা ১০-এর বেশি। সারা ভারতে হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে‚ একটি পুত্রসন্তানসহ পরিবারের অনুপাত একটি কন্যাসন্তান-সহ পরিবারের থেকে ৫০% বেশি।
পাল্লা দিয়ে কমছে সেক্স রেশিও। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন‚ এর জন্য কন্যাভ্রূণহত্যা তো দায়ী বটেই। তাছাড়া‚ আগে যতক্ষণ না ছেলে আসছে সংসারে‚ ততক্ষণ সন্তানের জন্ম দিয়ে যেতেন দম্পতিরা। ফলে কন্যাসন্তানের জন্ম হতো। এখন অনেকে একটি সন্তানেই সন্তুষ্ট থাকছেন। এবং গ্রামের মানুষ এখনো বিশ্বাস করেন‚ যত হাত‚ তত কাজ। মেয়েদের তো বিয়ে হয়ে যাবে। ঘরে যত বেশি ছেলে থাকবে তত বেশি অর্থ উপার্জন হবে। ফলে‚ পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যাক। কুছ পরোয়া নেহি। পুত্রসন্তান চাই বেশি বেশি করে।