লন্ডনে শনিবার লেইটনস্টোন টিউব স্টেশনে এক ব্যক্তি ছুরি চালিয়ে তিনজনকে আহত করার সময় আরেকজন লোক ‘তুমি কোনো মুসলিম নও’ বলে তাকে যে ধিক্কার জানিয়েছিলেন – তা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও এর প্রশংসা করেছেন।
মুহাইদিন মির নামের সোমালিয়ান-বংশোদ্ভূত ২৯ বছরের ওই যুবক তিন ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করার সময় বলছিলেন যে ‘সিরিয়ার ঘটনাবলীর প্রতিশোধ নেবার’ জন্যই তার ওই আক্রমণ। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ এসে তাকে টেজারগান দিয়ে নিয়ন্ত্রণে এনে গ্রেফতার করে।
ওই আক্রমণে গুরুতর আহত এক ব্যক্তি এখনো হাসপাতালে।
মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওতে শোনা যায়, উপস্থিত লোকজনের একজন চিৎকার করে আক্রমণকারীর উদ্দেশ্যে বলছেন, ‘ইউ এইন্’ট নো মুসলিম ব্রাভ’ অর্থাৎ ‘তুমি কোনো মুসলিম নও ভাই।’
যিনি এ কথা বলেন তার মুখ ভিডিওতে দেখা যায় নি, তার পরিচয়ও এখনো জানা যায় নি। কিন্তু টিভির খবরে প্রচারিত ওই ভিডিওটিতে তার কণ্ঠ ব্যাপক সাড়া ফেলে ব্রিটেনে।
ঘটনার পরদিনই টুইটারে এ উক্তিটি সবচাইতে জনপ্রিয় হ্যাশট্যাগে পরিণত হয়। জনপ্রিয় সান্ধ্য দৈনিক মেট্রো সহ একাধিক জাতীয় সংবাদপত্র প্রথম পাতায় এটিকে নিয়ে খবর প্রচার করে।
ব্রিটিশ সমাজের বহু খ্যাতনামা ব্যক্তি ও রাজনীতিবিদরা এটি রিটুইট করেন, এর প্রশংসা করেন।
সবশেষ এতে যোগ দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তিনি বলেছেন, আমরা এ বিষয়ে বহু বক্তৃতা দিই, কিন্তু ওই লোকটি আমার চাইতে অনেক ভালোভাবে তার বক্তব্যকে এক লাইনে প্রকাশ করেছেন।
টম নামে একজন তার টুইটে লেখেন, “এর চেয়ে বড় সত্য কথা কেউ কোনোদিন বলে নি।’
আলি নামের একজন উক্তিটির সমর্থনে কোরানের একটি আয়াত উদ্ধৃত করে লেখেন, একজন মানুষকে হত্যা করা গোটা মানবজাতিকে হত্যারই সমতুল্য।
জাফর আব্বাস নামে একজন টুইট করেন, আজ আমি ব্রিটিশ হিসাবে গর্ববোধ করছি। মো ফারুক নামের একজন বলেন, তিনি লক্ষ লক্ষ লোকের মনের কথাটি বলেছেন।
ম্যাট কেলি নামে একজন লেখেন, এই লোকটি গত দশ বছরের সব কথাকে একটি বাক্য দিয়ে বলে দিয়েছেন।
লেখক সরফরাজ মঞ্জুর টুইট করেন, কেউ কি বলতে পারেন ‘ইউএইন্টনোমুসলিমব্রাভ’ টি শার্ট কোথায় পাওয়া যাচ্ছে?
মুহাইদিন মির নামের আক্রমণকারীকে গতকাল হত্যাপ্রচেষ্টার অভিযোগে আদালতে তোলা হয়।
সূত্রঃ বিবিসি বাংলা