সুদীর্ঘ ইতিহাসে কত পরিবর্তনই না এসেছে ক্রিকেটে। গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে ওয়ানডে ক্রিকেট এসে খেলাটার চেহারাই পাল্টে দিয়েছে। রঙিন পোশাক আর কৃত্রিম আলোর ক্রিকেট জনপ্রিয়তায় হারিয়ে দিয়েছে টেস্ট ক্রিকেটকে। এই শতাব্দীর প্রথম দশকে আবার বিবর্তন—২০ ওভারের গতিসমৃদ্ধ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। এবার টেস্ট ক্রিকেটেও যুগান্তকারী ঘটনা। পাঁচ দিনের খেলাটি হবে ফ্লাডলাইটে। বলের রঙেও পরিবর্তন। লাল নয়, খেলা হবে গোলাপি বলে।
ইতিহাসের সন্ধিক্ষণের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ১৩৮ বছরের টেস্ট ক্রিকেট নতুন চেহারায় ক্রিকেটপ্রেমীদের সামনে আসতে যাচ্ছে শুক্রবার। অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড তৃতীয় টেস্টই হবে প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট।
ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ পেয়ে ভীষণ রোমাঞ্চিত দুই অধিনায়ক। নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালামের কণ্ঠে রোমাঞ্চটা ধরাও পড়ছে স্পষ্টভাবে, ‘এই ম্যাচ নিয়ে আমরা ভীষণ উত্তেজিত। আশা করি ম্যাচটা দুর্দান্ত হবে আর কোনো সমস্যা হবে না। আমরা যদি পঞ্চম দিনের শেষ সেশন কৃত্রিম আলোয় খেলতে পারি আর ম্যাচে যদি ফলাফল আসে তাহলে টেস্ট ক্রিকেটে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। হয়তো এই ম্যাচ টেস্ট ক্রিকেটকে অনেকখানি এগিয়ে দেবে।’
তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথও উচ্ছ্বসিত, ‘প্রথম দিবারাত্রির টেস্টে খেলে আমরা ইতিহাস গড়তে যাচ্ছি। আমি নিশ্চিত, সারা পৃথিবীতে বহু মানুষ ম্যাচটা দেখবে। বিশ্ব ক্রিকেটের জন্যই এটা দারুণ ঘটনা।’ নতুন ধরনের টেস্ট ক্রিকেটকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটা একটা দারুণ আকর্ষণীয় ধারণা। আমি তো মাঠে নামার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছি না। মনে হয় দর্শকরাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। দর্শকের কথা বিবেচনা করলে নিঃসন্দেহে প্রথম দুই টেস্ট ভীষণ হতাশাজনক ছিল।’
স্মিথের অনুমান নির্ভুল। অ্যাডিলেড টেস্ট নিয়ে সত্যিই মানুষের প্রবল আগ্রহ। টিকেট বিক্রির হার দারুণ। সংগঠকদের আশা, শুক্রবার প্রথম দিনে অন্তত ৪০ হাজার দর্শক থাকবে গ্যালারিতে। একটা তথ্য দিলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে। ২০০৮ সালে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড সর্বশেষ মুখোমুখি হওয়ার সময় প্রথম দিন মাত্র ১৬ হাজার ক্রিকেটভক্ত খেলা দেখেছিল।