ভাগ্যে থাকলে ঠেকায় কে? ইউনাটেড আরব এমিরাটস প্রবাসী এক বাংলাদেশি এরকমই একটি ঘটনার মাধ্যমে হঠাৎ করে কোটিপতি হয়ে গেছেন। তার আকস্মিক এই অর্থ প্রাপ্তি প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তিনি বাংলাদেশে ১০৩৯ দিরহাম মানি ট্রান্সফার করে পাঠানোর কিছুক্ষন পরেই ১০লাখ দিরহাম মূল্যের বিশাল অর্থ পুরস্কার হিসেবে পেয়ে যান।
হঠাৎ কোটিপতি প্রবাসী ঐ বাংলাদেশীর নাম মিজানুর আব্দুল ওয়াহান (৩৭)। তিনি দীর্ঘ বিশ বছর ধরে আবুধাবীতে একটি খামারে কর্মরত আছেন। তার ১০লাখ দিরহাম বাংলাদেশী টাকায় কনভার্ট করে তিনি প্রায় ২ কোটি ১১ লাখ টাকা পুরস্কার হিসেবে পেয়ে গেছেন। ইউনাইটেড আরব এমিরাটসের মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠান আল আনসারীর একটি বিশেষ ক্যাম্পেইনে বাংলাদেশে টাকা পাঠিয়ে ও্ই পুরস্কার অর্জন করেন। প্রবাসী মিজানুরের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন কোটিপতি হলে নিজের টাকায় একটি স্বপ্নের বাড়ি তৈরি করবেন এবং দেশে ফিরে দেশের সেবায় ব্যবসা দাড় করাবেন। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে মাসিক ৬০০ দিরহাম বেতনে চাকরী করতে করতে তিনি ক্লান্ত। কোটিপতি হওয়ার এই পুরস্কার প্রাপ্তি দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্নকে পূরন করতে বিশেষ সহযোগীতা করবে।
এক সাক্ষাৎকারে মিজানুর জানান তার স্বপ্ন আর মনের কথা, তিনি বলেন, “আমার বাবার পুরবো বাড়িটাকে নতুন করে গড়ে তোলা আর নিজের একটি স্বপ্নের বাড়ি বানানো আমার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন”। তিনি আরো জানান, দ্রুত দেশে ফিরে নিজ পরিবারকে সাহায্য করা আর আপন বোনদের দিকে খেয়াল রাখা। এছাড়া তিনি আরো বলেন, “নিজ ছেলে মেয়েদের ভালো শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলবো, নিজের একটি ব্যবসা দাড় করাবো যাতে আমার গ্রামের অনেক তরুনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়”। যদিও মিজানুর প্রাথমিক শিক্ষার পর আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সক্ষম হননি তথাপি তিনি শিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে পারেন। তার আরো একটি স্বপ্ন রয়েছে, আর তা হচ্ছে একটি গাড়ি কেনা, যেটা দিয়ে তিনি সারা বাংলাদেশ ঘুরতে পারেন, মানুষ জনকে জানতে পারেন আর প্রকৃতির শিক্ষা গ্রহন করতে পারেন।
মিজানুরের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস থেকে জানা যায়, তিনি ১৯৯৬ সালে ইউনাইটেড আরব এমিরাটসের আবুধাবিতে কাজের উদ্দেশ্যে যান। যদিও তার পিতাও সেখানে দীর্ঘ ৮ বছর চাকরী করেন। মিজানুরের হাতে যখন ১০ লাখ দিরহাম এর চেক তুলে দেয়া হয় তখন তিনি বলেন, যে জীবনে তিনি অভ্যস্থ ছিলেন, সেটা দ্রুত পরিবর্তিত হতে যাচ্ছে। মানি চেঞ্জারের ডিরেক্টর রাশেদ আল আনসারী জানান, আমাদের প্রোগ্রামের মাধ্যমে মিজানুরের কোটিপতি হওয়ার ঘটনায় আমরা তাকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাই, আশাকরি এতে তার জীবন আমূল বদলে যাবে। এছাড়াও ওই প্রোগ্রামে অন্যান্য বিজয়ীরা যথাক্রমে ৫০ হাজার এবং ১০ হাজার দিরহাম পুরস্কার পান।