muslim-womenদানশীলতায় এক অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে চলেছেন অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা সুসান কারল্যান্ড। তিনি সম্প্রতি ১ হাজার মার্কিন ডলার দান করার ঘোষণা দিয়েছেন। এটি কোনো সাধারণ দান নয়। প্রতিদিন মুসলিম হওয়ার কারণে তিনি তার ফেসবুক বা টুইটারে যেসব হেট ম্যাসেজ বা ঘৃণ্য বার্তা পেতেন তার বদলে এই অর্থ দান করছেন। বিষয়টা খুলেই বলি।

বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলার কারণে পশ্চিমা দেশগুলোতে মুসলিম বিদ্বেষ বেড়েছে এবং এই সম্প্রদায়ের সদস্যদের বিভিন্ন সময়ে নানা বিড়ম্বনাকর পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়। সুসান কারল্যান্ডও এর ব্যাতিক্রম নন। কয়েকমাস আগের ঘটনা। ফেসবুকে তিনি একটি ম্যাসেজ পান যাতে লেখা ছিল,একজন মুসলিম নারী হিসেবে তিনি নাকি হত্যা, খুন, যুদ্ধ, বহুবিবাহের মত নির্যাতনকে ভালোবাসেন। এ বার্তায় যথারীতি তার মন খারাপ হয়। কিন্তু তখন তার কোরাআন শরীফের একটি আয়াত মনে পড়ে যায়। যেখানে ‘ভালো কাজ দিয়ে মন্দ কাজের মোকাবেলা’ করার উল্লেখ ছিল।

chardike-ad

সুসান তখন সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি যতগুলো হেট ম্যাসেজ পাবেন তত ডলার দান করবেন। ফলে তার কাছে যত ঘৃণার বার্তা আসতে ততই তার দানের পরিমাণও বাড়তে থাকে। সবমিলিয়ে গত কয়েক মাসে তিনি এক হাজার হেট ম্যাসেজ পেয়েছেন। ওইসব ম্যাসেজে ইসলাম ধর্মের রীতিনীতি যেমন জিহাদ, হিজাব পরিধান, গরুর মাংস খাওয়া ইত্যাদি নিয়ে তাকে যা তা ভাষায় গালাগাল করা হত। এমনকি তাকে অস্ট্রেলিয়া থেকে চলে যাওয়ারও হুমকি দেয়া হয়েছিল।

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ওইসব ম্যাসেজের বদলে ইউনিসেফের শিশু তহবিলে এক হাজার মার্কিন ডলার দান করতে চলেছেন সুসান। বিদ্বেষকারীদের জন্য এর চাইতে বড় প্রতিশোধ আর কি হতে পারে!

প্রসঙ্গত, সুসান মেলবোর্নের মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন এবং ২০০৪ সালে তিনি অস্ট্রিলিয়ার সম্মানজনক ‘মুসলিম অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জিতেছেন। অন্যদিকে ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’ পত্রিকা সুসান এবং তার স্বামী ওয়ালেদ অলিকে অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী দম্পতি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল।