Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

bimanমেধা কমবেশি সকলের মধ্যেই রয়েছে। তবে সেই মেধাকে সকলের সামনে তুলে ধরাটা সহজ ব্যাপার না। এর জন্য যেমন ইচ্ছার প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন ইচ্ছা বাস্তবায়নে চেষ্ঠার আর চেষ্টার জন্য অধ্যাবস্যায়ের।

সম্প্রতি টাইমস অব ইন্ডিয়ার বাংলা সংস্করণে প্রকাশ করা হয়েছে এক অদম্য মেধাবীর গল্প। শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী হয়েও যে মানুষটি নিজেই তৈরি করেছেন একটি বিমান।

chardike-ad

ভারতের কেরালার প্রত্যন্ত গ্রাম ইদুক্কি। এই গ্রামেরই বাসিন্দা টমাস সাজি। গ্রামের লোকেরা তাকে বলতো ‘পোট্টেন’। এই মালায়ালম শব্দের বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায় হাঁদাগঙ্গারাম। কিন্তু সেই শব্দ সাজি টমাসের কানে যেত না। কেননা জন্ম থেকেই তার শ্রবণেন্দ্রীয় অকেজো।

তবে সেই ‘পোট্টেন’ সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে আর চেষ্টায় টু সিটার বিমান বানিয়েছেন। তাও আবার বিভিন্ন ব্যবহৃত বা ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে। বিমানের নাম দিয়েছেন SAJI X Air-S। আর এই ঘটনা তাকে স্থান করে দিয়েছে রেকর্ড বুকে। এখানেই শেষ নয়, এই বিশেষ কৃতিত্বের জন্য ডিসকভারি চ্যানেল তাকে একটি অনুষ্ঠানেও অংশ নেওয়ার অনুরোধ করেছে।

bimanকঠিন প্রতিবন্ধকতা জয় করে কীভাবে করলেন এমন অসাধ্য সাধন? উত্তর দিলেন সাজির স্ত্রী মারিয়া। মারিয়া বলেন, সাজির যখন ১৫ বছর বয়স, তখন বাড়ির কাছের একটি খেতে পোকা মারার স্প্রে করার কাজে ব্যবহৃত হত একটি ছোট প্লেন। সেই থেকেই বিমানের প্রতি তার চূড়ান্ত আগ্রহ। এক দিন সে সেখানকার এক পাইলটের কাছে গিয়ে আকারে-ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করে যে, সে প্লেনের ব্যাপারে খুব আগ্রহী। সেখানকার এক পাইলট সাজিকে তার মুম্বাইয়ের বাড়ির ঠাকানা দেয়। এটাও বলেন, যে সে যদি মুম্বাই পৌঁছতে পারে, তবে তিনি যথাসাধ্য তার জন্য কিছু করবেন।
মাস কয়েক বাদেই বাড়ি থেকে পালিয়ে মুম্বাইয়ে সেই পাইলটের বাড়িতে হাজির হন সাজি। তার আগ্রহ দেখে সেই পাইলট তাকে বাড়ির কাজের দায়িত্ব দেন এবং বিমান সংক্রান্ত নানা বাই পত্র দিয়ে তাকে পড়াতে আরম্ভ করেন।

দীর্ঘ বছরের চেষ্টার পর চলতি বছরে সাফল্য জুটেছে। তবে এই বিমান বানানোর জন্য নিজের সমস্ত পুঁজি সম্বল বিক্রি করেছেন সাজি। কিন্তু বিমানটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উড়ানের ব্যবস্থা কোথাও করা সম্ভব হচ্ছিল না। বিমান বানিয়েও শেষ পর্যন্ত প্রায় হতোদ্যম হয়ে পড়েছিলেন সাজি। সে সময় তিরুঅনন্তপুরমের অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার এসকেজে নায়ার তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন। কমান্ডার নায়ারের ফ্লাইট ট্রেনিং অ্যাকেডেমিতেই প্রথমবার আকাশে ওড়ে সাজির বিমান। পরে তারই সাহায্যে তামিলনাড়ুর মণিমুতারে বিমান ওড়ানোর সুযোগ পান সাজি।

bimanপ্রয়োজনীয় সকল পরীক্ষার পর বহুবার সফলভাবে আকাশে ওড়ার পর বছর পঁয়তাল্লিশের সাজি টমাস এই বিমানের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করছেন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশনে। যদিও সেখান থেকে এখনো সবুজ সংকেত মেলেনি।

সাজির আরও ইচ্ছে, এরপর টুইন ইঞ্জিন এয়ারক্রাফট বানাবেন। সঙ্গে চাইছেন একটা চাকরি। তার আশা, কাজ দেখে যদি কোনো নামী সংস্থা তাকে যদি একটা চাকরি দেয়, তবে একটু স্বচ্ছলভাবে বাঁচতে পারেন সাজি।