ভারতে দক্ষিণ মুম্বাইয়ের কোলাবায় ঈদুল আজহায় এক সম্প্রীতির দৃষ্টান্তই যেন স্থাপন করলেন সেখানকার হিন্দু-মুসলিমরা। মুসলমানরা এদিন ঈদের নামাজ আদায় করলেন গণপতি (গণেশ দেবতা) মন্দিরে। আর এতে সহযোগিতা করলেন সেখানকারই হিন্দুরা।
গত শুক্রবার সকাল ঠিক ৭টায় মন্দিরের পার্শ্ববর্তী মাদরাসা রাহমাতিয়া তালিমুল কোরআন মসজিদের বাইরে ঈদের জামাতের আয়োজন করা হয়। কিন্তু স্থানীয় মুসল্লিদের স্থান সঙ্কুলান হচ্ছিল না। আর কী করা! পরে আগত মুসলমানরা নামাজ আদায় করেন গণপতি মন্দিরে।
মন্দিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় ১৩শ মুসল্লি এদিন ঈদের নামাজ আদায় করেছেন মন্দিরের ভেতর।
তবে সেবা সংঘের সদস্য সন্তোষ নায়েক বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। চার বছর আগে রোজার ঈদেও এমন ঘটনা ঘটেছিল। তখন চলছিল গণেশ উৎসব। কাকতালীয়ভাবে রোজার ঈদ এসে যায় তখন। তখনও স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় গণপতি মন্দিরে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘এসব ঘটনায় কিছু লোক অবাক হতে পারেন। কিন্তু আমাদের কাছে এটা স্বাভাবিক। এখানে হিন্দু মুসলমানরা সবসময় একজোট হয়ে বসবাস করেন। এখানে জাতপাতের কোনো ভেদাভেদ নেই। হিন্দুরাও মুসলমানদের উৎসবে যোগ দিয়ে থাকেন।’
তার কথার সত্যতাও মেলে। এবারের ঈদুল আজহায় কাওয়ালি গানের আয়োজন করা হয়। হিন্দুরাও এতে অংশ নেয়। পরে মুসলমানরাও আরতিতে যোগ দেয়।
মেহফুজ খান নামে ২৫ বছরের যুবক প্রতি বছরই কোলাবায় গণেশ উৎসবের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। ৭০ জনের ওই কমিটির ৩০ জনই মুসলমান। মেহফুজের ভাষায়, ‘আগস্ট থেকে আমি গণেশ উৎসবের অর্থ যোগাড় করছি। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ সহযোগিতা দিয়ে থাকে। মাত্র দু’একজনের এসব কাজে নাক ছিঁটকানিভাব থাকে।’
আরেক জনের নাম ইলিয়াস খান। তাকে সেবা সংঘের অংশীদার বলা হয়ে থাকে। ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যাওয়া ছবিটি তারই তোলা।
এখানকার সেবা সংঘের সদস্যরা প্রায়ই বলে থাকেন, এসব উৎসব অনুষ্ঠানে তারা রাজনৈতিক বিভাজন চান না। তারা মনে করেন না এসব অনুষ্ঠানের ছবি বিতর্ক ছড়াবে। বরং এর ফলে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি আরো শক্তিশালী হবে। সূত্র : ডিএনএ ইন্ডিয়া