গৃহকর্মীকে নির্যাতনের মামলার আসামি জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় শাহাদত হোসেন এবং তার স্ত্রী গ্রেপ্তার এড়াতে বারবার অবস্থান পাল্টাচ্ছেন। তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিজের অবস্থান আড়াল করতে কয়েকবার মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড পরিবর্তন করেছেন শাহাদত।
মিরপুরের উপপুলিশ কমিশনার কাইয়ূম উজ জামান জানান, শাহাদত ও তার স্ত্রী বারবার মোবাইল সেট ও সিম পরিবর্তন করায় প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েও তাদের আটক করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে শাহাদাতের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, আজকালের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারেন শাহাদাত।
গত রবিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর কালশী সাংবাদিক কলোনি থেকে মাহফুজা আক্তার হ্যাপি নামে ১১ বছরের শিশু গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে পল্লবী থানা পুলিশ। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। ওই রাতেই শাহাদাত ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মিরপুর থানায় মামলা হয়। মামলার বাদী খন্দকার মোজাম্মেল হক নামের এক ব্যক্তি। তিনি পেশায় সাংবাদিক। পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির জানান, নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী হ্যাপিকে কালশী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হলেও ক্রিকেটার শাহাদাতের বাসা মিরপুর থানা এলাকায়। তাই সেখানেই মামলা হয়।
এ বিষয়ে শাহাদাত হোসেন গত রবিবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মেয়েটিকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি। সে পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছে। সকাল থেকে সে নিখোঁজ ছিল। এ কারণে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
নির্যাতনের শিকার কিশোরী গৃহকর্মী মাহফুজা আক্তার হ্যাপি ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছে। সে জানায়, তাকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন শাহাদাত ও তার স্ত্রী। সামান্য ভুল হলেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করতেন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার। ওইদিন তাকে সুজি পাকাতে দেয়া হয়। সুজির রং কিছুটা ভিন্ন হওয়ায় তার ওপর চলে ভয়াবহ এই নির্যাতন।
জাতীয় দলের একজন ক্রিকেটারের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে বিব্রত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বিশ্ব মিডিয়ায়ও এই খবরটি ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সুনাম ক্ষুণ্ন হবে বলেও মনে করেন ক্রিকেট্রপ্রেমীরা। শাহাদাতের মতো বিশিষ্টজনেরা যেন নিরীহ গৃহকর্মীদের ওপর চড়াও না হতে পারে সে জন্য কঠোর আইন প্রণয়নেরও দাবি জানিয়েছেন কেউ কেউ।