ভারতের উত্তর প্রদেশের এক পঞ্চায়েতে (গ্রাম্য সালিশি বৈঠক) প্রেমের অপরাধে অভিনব শাস্তির নির্দেশ দিয়েছে। রবি নামের এক যুবক উঁচু জাতের এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম করায় তার দুই বোনকে ধর্ষণের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় ওই পঞ্চায়েত।
ভারেতর রাজধানী দিল্লি থেকে খানিকটা দূরে অবস্থিত উত্তর প্রদেশের বাগপত জেলার একটি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ওয়ানইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে আরও জানিয়েছে, গ্রামের একটি মেয়ের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল রবির। মেয়েটি ছিল সামাজের উঁচু তলার মানুষ। এদিকে রবি ছিল নিচু জাতের গরিব মানুষ। তাই এ সম্পর্ক কোনোভাবেই মেয়েটির পরিবার মেনে নিতে পারেনি। পরে সুযোগ বুঝে গত ফেব্রুয়ারিতে অন্য ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেয় তার পরিবার। কিন্তু তা মানতে পারেননি রবি। আর তাই বিয়ের এক মাস পরেই রবি ও তার ওই প্রেমিকা পালিয়ে যান।
এরপরই ঘটনার তদন্তে স্থানীয় পঞ্চায়েত বিচারে বসে। পঞ্চায়েতের কেষ্টবিষ্টুরা আবার সবাই উঁচু জাতের। ফলে বিচারে ঠিক হয়, ভাইয়ের কৃতকর্মের ফল হিসাবে শাস্তি ভোগ করতে হবে রবির ২৩ বছরের দিদি মীনাক্ষি কুমারী ও তার ১৫ বছরের বোনকে। কী শাস্তি? ধর্ষণ করা হবে দুজনকে এবং একইসঙ্গে মুখে কালি মাখিয়ে সারা গ্রামে ঘোরানো হবে।
গত ৩১ জুলাই পঞ্চায়েত এই বিধান দেওয়ার পরই মীনাক্ষির পরিবার কোনো ক্রমে গোপনে গ্রাম ছেড়েছে। অভিযোগ, এরপরে গ্রামের লোকেরা পঞ্চায়েতের নির্দেশে তাদের বাড়ি ভাঙচুর করেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আপাতত গ্রাম ছাড়া অসহায় মীনাক্ষিরা ঘরে ফিরতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছে। অন্যদিকে রবির সঙ্গে পালিয়ে যাওয়া মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়েছে। তারও যাতে কোনো ক্ষতি গ্রামের লোকেরা করতে না পারে সেটা দেখতেও আবেদন জানানো হয়েছে সর্বোচ্চ আদালতে।
সরকারের কোনো অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে তৈরি একটি গ্রাম পঞ্চায়েত কীভাবে এতবড় সিদ্ধান্ত নিতে পারল ও দুটি মেয়ের জীবনকে বিপন্ন করতে উদ্যত হলো তা নিয়ে সরব হয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও।