এই প্রামাণ্যচিত্রটি ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত চীনে প্রচারের পর ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এটা দেখার পর অনেক প্রবাসী চীনার মনে গভীর দেশপ্রেমের অনুভূতি জাগ্রত হয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় এই প্রামাণ্যচিত্র প্রচারের পর ব্যাপক সাড়া ফেলে। এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরীয় জনগণ প্রামাণ্যচিত্রের শক্তিশালী ক্ষমতা উপলব্ধি করেন।
জানা গেছে, ‘রেশম পথ’ প্রামাণ্যচিত্রটি দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রচারের পর সেদেশের কেবিএস টিভি কেন্দ্র ব্যাপক জনবল ও অর্থ বরাদ্দ করে উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন বেশ কয়েকটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে। ফলে প্রামাণ্যচিত্রের ক্ষেত্রে কেবিএসের নেতৃত্বশীল অবস্থা তৈরি হয়।
৪৬ বছর বয়সী পার্ক চিনবুমের চীনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক আছে। গত শতাব্দীর ৮০’র দশকে তখন চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় নি। তখন ইংরেজি এবং জাপানি ভাষা হলো দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ ও জনপ্রিয় দুটি বিদেশি ভাষা। তবে তিনি সিউল বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা সভ্যতা বিভাগে পড়াশোনার সিদ্ধান্ত নেন।
বলা যায়, পার্ক চিনবুমের তখনকার সিদ্ধান্ত অনেক সাহসী। তবে এখনকার অবস্থা দেখে বলা যায়, পার্ক চিনবুমের সিদ্ধান্ত সঠিক।
চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ক দিন দিন ঘনিষ্ঠতর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চীনকে আরো বেশি করে জানার গুরুত্ব উপলব্ধি করেন তিনি। তাই ২০০৮ সালে প্রায় ৪০ বছর বয়সী পার্ক চিনবুম মাস্টার্স ডিগ্রি পাওয়ার জন্য চীনের বিখ্যাত ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
ডিগ্রি পাওয়ার পর তিনি পেইচিংয়ে কাজ করা শুরু করেন। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির দুই অধিবেশনের ঘটনাস্থল, হোনান প্রদেশের গ্রামাঞ্চল এবং ইউন নান প্রদেশের ভূমিকম্পের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তিনি। বলা যায়, অল্প সময়ের মধ্যে কেবলমাত্র তিব্বত ছাড়া চীনের যাবতীয় প্রদেশ, কেন্দ্রশাসিত শহর এবং হংকং ও ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল ঘুরে দেখেন তিনি।
২০১৫ সালের প্রথম দিকে পার্ক চিনবুম অন্য দু’জন প্রযোজকের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে ‘সুপার চায়না’ প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন এবং এই প্রামাণ্যচিত্র খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই সফলতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু’দেশের সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম। একজন মিডিয়া কর্মী হিসেবে ভবিষ্যতে চীনের আরো বেশি বিষয়বস্তুর উপর দৃষ্টি রাখতে চান তিনি। দু’দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা বাড়ানোর জন্য তার উদ্যোগ আরো বেশি জানালা খুলে দিতে পারে বলে তিনি আশাবাদী।