বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের বরাত দিয়ে একাধিক স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, কর্মিসভায় অংশ নিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে কাজী জাফরের কুমিল্লা যাওয়ার কথা ছিল। সকাল পৌনে সাতটার দিকে তাঁর সাড়া না পেয়ে তাঁকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কাজী জাফরের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ডায়াবেটিস ও কিডনির রোগসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তিনি গুরুতর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কাজী জাফরের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
নানা কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত কাজী জাফর। ষাটের দশকের শুরুতে তিনি অবিভক্ত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তী সময় যুক্ত হন শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে। ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। টঙ্গী অঞ্চলের একজন প্রভাবশালী শ্রমিকনেতা হিসেবে বিভিন্ন আন্দোলনে শ্রমিকদের সংগঠিত করার ব্যাপারে তাঁর ভূমিকা ছিল।
মাওপন্থী নেতা কাজী জাফর একসময় সঙ্গী হন জিয়াউর রহমানের। গড়েন ইউনাইটেড পিপলস পার্টি (ইউপিপি)। পরে জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠন করলে ছিটকে পড়েন কাজী জাফর। পরবর্তী সময়ে তিনি আরেক সামরিক শাসক এরশাদের সঙ্গে যোগ দেন। এরশাদের শাসনামলে তিনি প্রথমে ক্যাবিনেট মন্ত্রী এবং পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদ সরকারের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
দীর্ঘ তিন দশক জাতীয় পার্টির সঙ্গে থাকার পর ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর কাজী জাফরকে দল থেকে বহিষ্কার করেন এইচ এম এরশাদ। এরপর দলের একাংশকে নিয়ে জাতীয় পার্টি নামেই নতুন দল গঠন করে গতবছর ২৫ জানুয়ারি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেন কাজী জাফর।