ঘাতকব্যাধি ক্যানসার চিকিৎসায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসতে চলেছে। দুজন চিকিৎসাবিজ্ঞানী ১৪ বছর গবেষণা করার পর এই সুখবর দিচ্ছেন যে, লাখ লাখ টাকা নয়, হয়তো ৩০ টাকায় মিলবে ক্যানসারের থেরাপি।
কলকাতার দুই বাঙালি চিকিৎসাবিজ্ঞানী বলেছেন, ডোপামাইন হরমোনকে কাজে লাগিয়ে সহজে ক্যানসার চিকিৎসা করা যাবে। ডোপামাইন হরমোনকে ‘হ্যাপি হরমোন’ বলা হয়। এই হরমোন টিউমার ধ্বংস করতে সক্ষম।
হ্যাপি হরমোন নিয়ে কাজ করছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানী পার্থ দাশগুপ্ত ও সুজিত বসু। তারা দীর্ঘদিন ধরে এই হরমোনের কার্যকারিতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। পার্থ ও সুজিত জানিয়েছেন, ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে তারা সফলতা পেয়েছেন। কিন্তু এখনো মানুষের ওপর এর কার্যকারিত পরীক্ষা করা হয়নি। তবে তাদের গবেষণার ফলাফল বলছে, মানুষের শরীরে হ্যাপি হরমোন ব্যবহার করে ক্যানসার চিকিৎসায় সফলতা পাওয়া যাবে। তাই যদি সত্যি হয়, তাহলে ক্যানসার চিকিৎসায় এটিই হবে সর্বাধুনিক ও স্বল্প ব্যয়ের চিকিৎসাপদ্ধতি।
গবেষক পার্থ ও সুজিত বলেছেন, তাদের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ক্যানসার চিকিৎসায় খরচ হবে মাত্র ৩০ টাকা (২৫ রুপি)। যেখানে কেমেথেরাপির কোর্সে ব্যয় করতে হয় লাখ লাখ টাকা।
ভারতের চিত্তরঞ্জন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইমেরিটাস অধ্যাপক পার্থ দাশগুপ্ত। আর সুজিত বসু ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির ওয়েক্সনার মেডিক্যাল সেন্টারে কর্মরত আছেন। তারা যৌথভাবে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ডোপামাইন হরমোন নিয়ে গবেষণা করতে করতে অবশেষে সফলতার দ্বারে পৌঁছেছেন।
ডোপামাইন হলো একটি নিউরোট্রান্সমিটার, যা মানুষের চলাচল ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখে। পার্থ ও সুজিত বলছেন, টিউমারে প্রবেশ করে ক্যানসার কোষ গিলে ফেলতে পারে ডোপামাইন। এমনকি ক্যানসার কোষগুলো একসময় ধ্বংসও করতে পারে। রক্তকণিনাগুলোর বৃদ্ধি যদি ধরা যায়, তাহলে টিউমার ধ্বংস করতে সক্ষম হবে ডোপামাইন।
তবে ডোপামাইনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রোধ করার পরিপূর্ণ উপায় এখনো তাদের আয়ত্তে আসেনি। ধারাবাহিক গবেষণায় এ ক্ষেত্রেও সাফল্য পাওয়া যাবে বলে তাদের বিশ্বাস। আর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ক্যানসার চিকিৎসা হবে মাত্র ৩০ টাকায়।
তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।