অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে চড়ে ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনটি বাংলাদেশের হতে পারত। প্রথম দুই সেশন দাপটের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের শাসন করলেও শেষ সেশনে ছন্দ হারিয়ে ফেলে তারা।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৮ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৪৮।
দলপতি মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে সর্বোচ্চ ৬৫ রান আসে। এছাড়া মুমিনুল হক ৪০, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসান ৩৫ করে রান করেন।
ঢাকা টেস্টের শুরুটা ছিল রোমাঞ্চের। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ ব্যাটিং পাওয়ায় উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিং থেকেও দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার ডেল স্টেইনের ৪০০তম উইকেটের অপেক্ষায় ছিলো ক্রিকেট প্রেমিরা। কে হবেন ‘স্টেইনগানের’ শিকার।
অপেক্ষায় রাখলেন না ওপেনার তামিম! দিনের খেলার ১৯ মিনিটেই দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরের উল্লাস। স্টেইনের করা ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে তামিম ক্যাচ দেন প্রথম স্লিপে হাশিম আমলার হাতে। আগের ওভারেও দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন। কিন্তু ডিন এগলার তামিমকে ইনিংস বড় করার সুযোগ করে দেন। কিন্তু স্টেইনগানের সামনে পরের ওভারে আর দাঁড়াতে পারেননি তামিম। তামিমের উইকেট নিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসের ১৩তম বোলার হিসেবে চারশ’ উইকেট শিকারী ক্লাবে প্রবেশ করেন স্টেইন।
তামিম ফেরার পর প্রথম সেশনে আর কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। ২.৫৯ গড়ে ২৯ ওভারে রান তুলে ৭৫। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং আক্রমণ বেশ ভালোভাবেই সামাল দেন ইমরুল ও মুমিনুল।
তবে মধাহ্ন বিরতি থেকে ফিরেই মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে দুই ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরেন। দলীয় ৮১ রানের সময় মুমিনুল (৪০) জেপি ডুমিনির বলে বোল্ড হওয়ার পর ৮৫ রানে এই অফস্পিনারের এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন ইমরুল (৩০)।
চতুর্থ উইকেটে ৯৪ রানের জুটি গড়েন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে আব্দুর রাজ্জাক ও শাহরিয়ার নাফিস ৬৯ রান করেন।
বড় ইনিংস না খেলার আক্ষেপ অনেক দিন ধরেই ছিল মুশফিকুর রহিমের। মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে বেশ দারুণ ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন মুশফিক। দুজনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় বড় সংগ্রহের পথে হাঁটছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ সেশনে রুদ্রমূর্তি ধারণ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
চা-বিরতিতে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১৫৪। শেষ সেশনে ৩৩.১ ওভারে ৯৪ রান তুলে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর জুটি ভাঙেন ডেল স্টেইন। ৯১ বলে ৩৫ রান করে বাভুমার হাতে ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহ। দলীয় ১৮০ রানে মাহমুদউল্লাহ বিদায়ের পর পঞ্চম উইকেটে সাকিব ও মুশফিক ৩৫ রান যোগ করেন। এরপর বাংলাদেশের ইনিংসে আসা-যাওয়ার মিছিল শুরু হয়।
২১৫ রানে মুশফিকুর রহিম এগলারের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন। আম্পায়ার আঙ্গুল তোলার পর রিভিউয়ের আবদেন করেন মুশফিক। কিন্তু তাতেও রক্ষা হয়নি। ১১ ইনিংস পর ক্যারিয়ারের ১৪তম হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ৬৫ রানে আউট হন টাইগার দলপতি।
এরপর লিটন (৩), সাকিব (৩৫) ও শহীদ (১) রানে প্রোটিয়াদের উইকেট উপহার দেন। লিটন ডুমিনের বলে, সাকিব মর্কেলের বলে শহীদ স্টেইনের বলে আউট হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন। দুই ওভার আগেই আম্পায়াররা দিনের খেলা শেষ করে দেন। নাসির হোসেন ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন। ৮৮ ওভারের খেলায় কোনো নতুন বল নেওয়া হয়নি।