সিলেটে শিশু শেখ মো. সামিউল আলম ওরফে রাজনকে (১৩)পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামী মুহিত আলমের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে সিলেট মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক ফারহানা ইয়াসমিন এ আদেশ দেন। একই ঘটনায় জড়িত সৌদি আরব প্রবাসী কামরুল ইসলামের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পুলিশ। রাজনকে নির্মমভাবে নির্যাতন করার ভিডিওচিত্র দেখে মুহিত ও কামরুলের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত করা হয়।
মুহিতকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন করেছিলের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহানগরের জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর হোসেন।
চুরির অভিযোগে গত বুধবার সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডে সবজিবিক্রেতা সামিউলকে একটি দোকানঘরের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। নির্মম নির্যাতন চালিয়ে রাজনকে হত্যা করার পর মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) দুপুর পৌনে ১টার দিকে একটি মাইক্রোবাস যোগে (ঢাকা মেট্টো-চ-৫৪-০৫১৬) তার মরদেহ গুম করার চেষ্টা করা হয়। এ সময় শহরতলীর কুমারগাঁও এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় মুহিত আলমকে আটক করে জালালাবাদ থানা পুলিশ। আটকের পর মুহিত পুলিশের কাছে ১৬১ ধারায় জবানবন্দিতে রাজন হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন। গ্রেফতারকৃত মুহিত এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের নাম প্রকাশ করলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
নিহত রাজন কুমারগাঁও বাসস্টেশন সংলগ্ন সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের মাইক্রোবাস চালক শেখ আজিজুর রহমানের ছেলে।
এদিকে, রাজনকে হত্যার আগে নির্মমভাবে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র প্রকাশ নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওচিত্রটি এখন মোবাইলের মাধ্যমে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৮ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের ভিডিওচিত্র থেকে নির্যাতনকারী চিহ্নিত এবং তাদের মুখচ্ছবিকে বড় করে তাঁরা পোস্টার তৈরি করেছে।
একই ঘটনায় ভিডিওচিত্র দেখে চিহ্নিত অপর আসামী সৌদি প্রবাসী কামরুল ইসলামের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তিনি এখনও পলাতক রয়েছেন। সিলেট মহানগরীর জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান, “আমরা ঢাকাস্থ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে কামরুলের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বেতারবার্তা ও চিঠি দিয়েছি।”