পতিভক্তির সুযোগে স্ত্রীর উপর অত্যাচার নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের নানা দেশে স্বামীর অত্যাচার সহ্য করছেন অসংখ্য নারী। ভালোবাসার পরিবর্তে নারী পেয়েছেন অবহেলা; যত্নের দামে কিনে নিয়েছেন বেত্রাঘাত।
তবে এর ব্যতিক্রম কিছু ঘটতে যাচ্ছে ভারতে। স্বামীর অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে হাতে তলোয়ার নিচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের মেরঠের আমহেরা আদিপুর গ্রামের শতাধিক স্ত্রী।
তারা বুঝে গেছেন মুখ বুজে স্বামীদের অত্যাচার সহ্য করলে তা বন্ধ হবে না। এর জন্য ‘পাল্টা’ দিতে হবে। তাই গ্রামের মহিলারা ঘোষণা করেছেন, স্বামী যদি মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করেন তবে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে না।’
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে গ্রামের ১০০-র বেশি মহিলা এক জায়গায় জড়ো হয়ে ঠিক করেছেন, কোনও রকম পারিবারিক কলহ, জুয়া খেলা, কন্যাভ্রূণ হত্যাসহ নানান অন্যায়-অত্যাচার আর তারা মানবেন না।
প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান সুনীতা দেবী বলেন, ‘ গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় পুরুষদের জুয়া খেলতে দেখা যায়। এতে শুধু তাদের টাকাই নষ্ট হয় না; পাশাপাশি পরিবারের উপরও এর খারাপ প্রভাব পড়ে। এর বিরুদ্ধেও আমরা আন্দোলন গড়ে তুলব।’’ কন্যা ভ্রূণ হত্যার বিরুদ্ধেও সচেতনতা গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন সরোজ দেবী নামে এক মহিলা।
পুলিশ তোলা তুললে তাকেও ছাড়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
সব মিলিয়ে পুরো বিষয়টিই যেন উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখন্ডের সম্পত পাল দেবীর তৈরি করা ‘গুলাবি গ্যাং’-এর প্রতিচ্ছবি। শুধু মাত্র মহিলাদের নিয়ে গড়া এই ‘গুলাবি গ্যাং’ মহিলাদের উপর অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালায়। এই ‘গুলাবি গ্যাং’-কে নিয়েই তৈরি হয়েছে ‘গুলাব গ্যাং’ ছবিটি।
সম্পত পাল দেবীর মতোই লড়াইয়ে নেমেছেন সুনীতা দেবী-সরোজ দেবী-রীতা সিংহরা। রীতা বলছেন, ‘আমাদের প্রতিবাদ না করার কারণেই সমস্যাগুলি এই পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। খারাপ কাজের আখড়া হয়ে উঠেছে আমাদের গ্রামটি। আমাদের এই সব বন্ধ করতেই হবে।’
সূত্র: এবিপি আনন্দ