বাংলাদেশ থেকে আগামী তিন বছরে ১৫ লাখ কর্মী নেবে মালয়েশিয়া। বৃহস্পতিবার ২৫ জুন মালয়েশিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘বারনামা’র এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় চুক্তি স্বাক্ষর করতে ঈদের পর ঢাকা আসছে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতু সেরি জাহিদ হামিদির উদ্ধৃতি দিয়ে বারনামা জানায়, মালয়েশিয়ার বিভিন্ন খাতের দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী চাহিদা পূরণে কয়েকটি ধাপে ১৫ লাখ শ্রমিককে বাংলাদেশ থেকে আনা হবে।
সম্প্রতি মালয়েশিয়া সফর গিয়ে বিষয়টি চূড়ান্ত করেন বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক জনশক্তি রফতানি বিষয়ক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গত ২৪ জুন পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাহিদ হামিদির সঙ্গে তার বৈঠকের পর বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
ওই বৈঠকের পর জানা যায়, আগামী এক বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ থেকে পাঁচ লাখ কর্মী নেবে মালয়েশিয়া। তবে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত খবরে তিন বছরে ১৫ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার কথা জানায় বারনামা।
এসব বাংলাদেশি শ্রমিক বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে কৃষি ও বনায়ন খাতে কাজ করবেন বলে জানিয়েছে বারনামা। তবে যারা মালয়েশিয়ায় বর্তমানে অবৈধভাবে কাজ করছেন তারা এই সুযোগ পাবেন না।
এজন্য চুক্তি স্বাক্ষর করতে ১৭ জুলাইয়ের পর (ঈদের পর) একটি মালয়েশীয় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে।
মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি দলের এই সফরেই দেশটিতে বেসরকারিভাবে জনশক্তি রফতানি বিষয়ক চুক্তি (বিটুবি) হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) প্রক্রিয়ার আওতায় জনশক্তি পাঠানো হবে। এর আওতায় প্রাথমিকভাবে আগামী এক বছরে মালয়েশিয়ায় পাঁচ লাখ কর্মী পাঠানো হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম বলেন মালয়েশিয়া বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) পদ্ধতিতে চলতি বছরেই বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে। বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি সরকারের অনলাইনে নিবন্ধিত ডাটাবেস থেকে এই কর্মী পাঠাবে। তবে কেউ যাতে প্রতারণার শিকার না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবে সরকার। এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করতে শিগগিরই মালয়েশিয়ার একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে। ঈদের পর মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে দিন ঠিক করে আমরা জানাব।
উল্লেখ্য, ‘অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয়’ আরও অন্যান্য অজুহাত দেখিয়ে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করে মালয়েশিয়া। তিন বছর বন্ধ থাকার পর ২০১২ সালে সরকারিভাবে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানির (জিটুজি) উদ্যোগ নেয়া হয়। জিটুজি পদ্ধতিতে পাঁচ বছরে পাঁচ লাখ শ্রমিক মালয়েশিয়া যেতে পারবেন বলে তখন বলা হলেও গত তিন বছরে এ প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়া গেছে মাত্র ১১ হাজার শ্রমিক।
এদিকে বৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথ রুদ্ধ হওয়ায় আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ে সাগরপথে অবৈধ মানবপাচার। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার জিটুজি থেকে সরে এসে বিটুবির মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। এ পদ্ধতিতে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোই মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাবে, তবে ওই শ্রমিকদের হতে হবে নিবন্ধিত। সরকার শুধু প্রয়োজনীয় তদারকির দায়িত্ব পালন করবে।
সৌজন্যেঃ বাংলানিউজ২৪