ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের বিমানটি রোম থেকে শিকাগো যাচ্ছিল। যখন মধ্য আটলান্টিকেও উপর দিয়ে যাচ্ছিলো, তখনই এক বিমানযাত্রী বাদাম খাবেন বলে জেদ ধরলেন। তার কথামত তাকে বাদাম পরিবেষণ করা হলেও তার সাধ মেটেনি। আরো বাদাম চাই তার। প্রত্যাশামত বাদাম না পেয়ে বিমানের মধ্যেই গন্ডগোল লাগিয়ে দিলেন। তাকে বুঝিয়েও ব্যর্থ হন এয়ারহোস্টেসরা। শেষ পর্যন্ত পাইলট রুট ছেড়ে প্রায় ৫০ হাজার লিটার জ্বালানি পুড়িয়ে আয়ারল্যান্ডে জরুরী অবতরণ করতে বাধ্য হন।
বিমানসংস্থার খবর অনুযায়ী, ওই দিন রোম থেকে ওড়ার প্রায় ৫০ মিনিট পর থেকেই বাদাম খাবেন বলে আবদার শুরু করেন জেরেমি ম্যাথিস থেডে নামে ওই বিমানযাত্রী। তাঁর কথা মেনে বাদাম এনে দিলেও তাতে সন্তুষ্ট হননি তিনি। আরও বেশি পরিমাণে বাদামের জন্য চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন তিনি। বিমান সেবিকাদের অভিযোগ, ওই যাত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও তিনি কথা শোনেননি। যেখানে বিমান যাত্রীদের আসনের বেল্ট বেঁধে বসে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেখানে কথার অবাধ্য হয়ে সারা বিমানের মধ্যে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন। বিমানের বাকি যাত্রীদের জন্য অস্বস্তি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়ে বার বার জিনিসপত্র নামিয়ে যাতায়াত করার রাস্তা আটকে দিচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করতে গেলে ওই যাত্রী বিমানসেবিকাদের উপরেও রীতিমতো চোটপাট করেছেন বলে অভিযোগ। কোনও মতেই ওই যাত্রীকে বাগে আনতে না পেরে অবশেষে রণে ভঙ্গ দেন বিমান সেবিকারা। সমস্ত বিষয়টি জানানো হয় বিমানের পাইলটকে।
এর পরেই বিমান নিয়ে অন্য পথে আয়ারল্যান্ড চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন পাইলট। জরুরি অবতরণের কথা আগে থেকে জানিয়ে রাখায় বেলফাস্ট বিমানবন্দরে আগে থেকেই হাজির ছিল পুলিশ। বিমান নামার পর ওই যাত্রীকে নামিয়ে আনা হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ঘটনার জেরে বিস্তর অসুবিধায় পড়তে হয় বিমানের বাকি যাত্রীদেরও। শনিবার রাতে আয়ারল্যান্ড থেকে ওড়েনি ওই বিমান। ফলে সারা রাত বেলফাস্ট বিমানবন্দরেই শুয়ে বসে কাটিয়ে দিতে হয় তাঁদের।
জেরেমি যে শাস্তিযোগ্য আচরণ করেছেন, তা স্বীকার করতে নারাজ তাঁর আইনজীবী। বিমানসংস্থা জানিয়েছে, ওই যাত্রী বিমানের ভিতর ঝামেলা বাধিয়ে বসে ছিলেন। বার বার বিমানসেবিকাদের কাজে বাধাও দিচ্ছিলেন। উড়ানের সময় এমন করলে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। তাই পাইলট কোনও ঝুঁকি না নিয়ে আয়ারল্যান্ডে চলে যান।