রোজার সময় একটি সমস্যা প্রায়ই হতে দেখা যায়। সেটা হল পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন। আমাদের দেহে ৫০-৭০ ভাগ পানি। পানি গ্রহণ ও বর্জন এই দুই প্রক্রিয়ার ওপর পানির সমতা নির্ভর করে। একজন পূর্ণবয়স্কের দৈনিক কমপক্ষে দুই থেকে তিন লিটার পানি প্রয়োজন। এর বেশি অংশ আসবে তরল খাবার থেকে। বাকি অংশ দৈনিক গ্রহণীয় খাবার থেকে। এদিকে ঘাম, মূত্র এবং মলের মাধ্যমে কিছু পানি ব্যয়িত হয়। বাকিটা ব্যয় হয় শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে।
পানীয় জল গ্রহণের মাধ্যমে এর ভারসাম্য ঠিক থাকে। একে জলীয় সাম্য বলে। পানির স্থিতিস্থাপকতার জন্য আমরা খাবার গিলে খেতে পারি। এছাড়া শেষ্মারণের জন্য অন্ত্রনালী, শ্বাস-প্রশ্বাস, বিপাক ক্রিয়া, প্রস্রাবের জন্যও পানি প্রয়োজন হয়।
রোজার সময় দেহে পানির ভারসাম্যতা নষ্ট হয় বলে অনেকে আশংকা করে থাকেন। যদিও এটা আংশিকভাবে সত্য। কিন্তু যদি ব্যাপারটা এমন হয়, ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত দেহের পুরো পানির চাহিদা মেটানো যায়, তাহলে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
পানি শূন্যতা রোধে তাই যুগ যুগ ধরে ইফতারের প্রথম আহার হিসাবে শরবত বিবেচিত হয়ে আসছে। বিভিন্নভাবে শরবত তৈরি করা যায় যেমন- ইসপগুলের ভুসি, তোকমা, লেবু, তেঁতুল, বেল, বিভিন্ন ফলের রস, দুধ, দই, চিড়া ইত্যাদি দিয়ে। শরবত ছাড়াও রাখা যেতে পারে ভেজানো চিড়া, দই, হালিম, পায়েস, দুধ-সেমাই ইত্যাদি।
সন্ধ্যারাতে ও সেহরিতে পাতলা ডাল, দুধ ও ভুনা তরকারির পরিবর্তে ঝোলসহ তরকারি রাখতে পারলে ভালো হয়। এভাবে যদি রমজানের সবগুলো দিনের আহার ঠিক রাখা যায়, তাহলে পানিশূন্যতা নিয়ে কোনও ভয় থাকা উচিত নয়।
তথ্য- আখতারুন নাহার আলো, প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা, বারডেম।