Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

india-armyভারতের সেনা বাহিনীর একটি বিশেষ দল সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের মধ্যে ঢুকে অভিযান চালিয়ে ২০ জন বিচ্ছিন্নতাবাদীকে হত্যা করেছে। সামনের দিনে এ ধরনের আরো অভিযান চালাতে চায় ভারত। ভারতীয় সেনা বাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা তাদের (বিচ্ছিন্নতাবাদী) চাপে রাখতে চাই।’

সেনা বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘সেনা বাহিনীর হেলিকপ্টার এই অভিযানে ব্যবহার করা হয়নি। এটি ছিল এক রাতের স্থল অভিযান। আমরা হেলিকপ্টার ব্যবহার করিনি, কারণ এতে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আগে থেকে সতর্ক হওয়ার সুযোগ পেয়ে যেত।’ তবে সেনা বাহিনীর বিশেষ দল হেলিকপ্টারযোগে সীমান্তের কাছে পৌঁছায়।

chardike-ad

সোমবার রাতে ২০ থেকে ২৫ জন কমান্ডো মিয়ানমার সীমান্তের কাছে অবস্থান নিয়ে অভিযানের জন্য প্রস্তুত হয়। এর পর তারা হামাগুঁড়ি দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ক্যাম্পের দিকে এগিয়ে যায়।

ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের কাছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের দুটি ক্যাম্পে ভারতীয় সেনা বাহিনীর ২১ প্যারা স্পেশাল ফোর্সেস (এসএফ) ব্যাটালিয়নের প্রায় ২৫ জন কমান্ডো হানা দেয়। মূল অভিযানের স্থায়ীত্ব ছিল ৪৫ মিনিট।

উল্লেখ্য, একটি এসএফ ব্যাটালিয়নে চারটি দল থাকে। প্রতি দলে ১০০ কমান্ডো থাকে। দলগুলো ছোট দলে বিভক্ত করা হয়। তারপর তাদের কয়েকটি ছোট ছোট স্কয়াডে ভাগ করা হয়।

সূত্রের তথ্য মতে, স্পেশাল ফোর্সেসের এই কমান্ডোরা সর্বাধুনিক ব্যবস্থায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। আসামের জোড়হাট ও এর আশপাশের এলাকায় এসব কমান্ডোরা বিশেষ অভিযান পরিচালনায় নিয়োজিত থাকে। এসব অভিযান ‘অপারেশন হিফাজত’ নামে পরিচিত। নাগাল্যান্ড, মনিপুর ও আসামে অপারেশন হিফাজত পরিচালিত হয়। কিন্তু সীমান্ত পার হয়ে মিয়ানমারের মধ্যে ঢুকে পরিচালিত নতুন এই অভিযানের কোনো নাম দেওয়া হয়নি।

গোয়েন্দা তথ্যমতে, মিয়ানমারের দুটি ক্যাম্পে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এনএসসিএন (কে), পিপলস লিবারেশন আর্মি অব মনিপুর (পিএলএ), ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (উইএনএলএফ) এবং মনিপুর নাগা রেভ্যুলিউশনারি ফ্রন্ট (এমএনআরএফ)-এর সদস্যরা অবস্থান করছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে দ্রুত অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। গোয়েন্দা তথ্যমতে, ওই দুই ক্যাম্পে অবস্থান করা কয়েকজন বিচ্ছিন্নতাবাদী গত বৃহস্পতিবার চানডেলে সেনা কর্মকর্তাদের ওপর হামলায় অংশ নেয়।

পোনযু এলাকায় অবস্থিত একটি ক্যাম্পে এনএসসিএন (কে)-এর তৃতীয় ব্রিগেডের ঘাঁটি। এই ঘাঁটিতে অবস্থান নিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সেনা বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। আঙ্কজেযায় অবস্থিত আরেকটি ঘাঁটি ব্যবহার করে বিভিন্ন সংগঠনের সন্ত্রাসীরা।

ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সূত্র জানায়, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা চিন্তাই করেনি, সীমান্ত পার হয়ে তাদের ওপর হামলা হবে। তবে তারা কিছুটা প্রতিরোধ তৈরির চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের সব চিন্তা ভেস্তে গেছে।

এদিকে হামলার ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও প্রকৃতপক্ষে কতজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে, তার সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। কোনো কোনো সূত্র জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ১০০ জনের বেশি। কিন্তু সেনা বাহিনী বলছে, নিহতের মোট সংখ্যা ২০ জনের বেশি নয়। এতে গুরুতর আহত হয়েছে ১১ জন এবং ১৫ জনের মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী কিছুটা আহত হয়েছে। তবে আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৫০ জন।

এদিকে মিয়ানমারে অভিযান চালানো কমান্ডোদের গ্রুপ ছবি প্রকাশ করেছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সফল এই অভিযান নিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রচার চালাচ্ছে এই মন্ত্রণালয়। তবে বিরোধী দল কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধী বলেছেন, সেনা বাহিনীকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা উচিত হবে না।

তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন, সৌজন্যেঃ রাইজিংবিডি