সামান্থা লিউথওয়েট। বয়স ৩২। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, চার সন্তানের মা। বিশ্ব তাকে জানে ‘হোয়াইট উইডো’ নামে। এই ব্রিটিশ নারী একজন দুর্ধর্ষ জঙ্গি। অভিযোগ রয়েছে, গত মাসে কেনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৮ জন সহ মোট ৪০০ জনকে হত্যা করা হয়েছে এই দুর্ধর্ষ নারীর নেতৃত্বে। খোদ ব্রিটেনেই সে এখন মোস্ট ওয়ান্টেড।
২০০৫ সালে লন্ডনে এক বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত আত্মঘাতী জঙ্গি জার্মেন লিন্ডসের সামান্থা। ওই বিস্ফোরণের পরই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় সে। এরপর বিভিন্ন জায়গা পরিবর্তন করে সে। এমনকী, ইন্টারপোলের চোখে ফাঁকি দিতে নিজের রূপ একেবারে বদলে ফেলে সামান্থা।
ব্রিটেনের একটি বহুল-প্রচলিত দৈনিকে সামান্থাকে নিয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কেনিয়া ও সোমালিয়া জুড়ে একাধিক আত্মঘাতী হামলা ও গাড়ি বিস্ফোরণ সহ অজস্র জঙ্গিহানায় নেতৃত্ব দিয়েছে হোয়াইট উইডো নামে খ্যাত সামান্থা । প্রায় ৪০০ জনকে হত্যা করেছে এই ব্রিটিশ জঙ্গি।
সোমালি নিরাপত্তা কর্তাদের উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আফ্রিকার আল-শাবাব জঙ্গিগোষ্ঠীর বহু শীর্ষ নেতা সোমালিয়ার ড্রোন হামলায় খতম হওয়ার পর দলে এখনউঁচু জায়গায় পৌঁছে গেছে সামান্থা। এখন সে আল-শাবাবের শীর্ষনেতা আহমেদ ওমরের কার্যত ডান হাত। যে কোনও হামলার দায়িত্বে থাকে এই শ্বেতাঙ্গী।
প্রসঙ্গত, আল-শাবাব হল আল-কায়দা জঙ্গিগোষ্ঠীর একটি ভাগ, যারা মূলত আফ্রিকায় নাশকতামূলক কার্যকলাপ চালিয়ে থাকে।
নিরাপত্তারক্ষীদের মতে, ২০১৩ সালে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির ওয়েস্টগেট মলে হামলা যেখানে ৬৭ জন প্রাণ হারায়। গত মাসে সেদেশেরই উত্তরপ্রান্তে গারিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলায় সেখানে ১৪৮ জন নিহত হয়। এসব হামলার মাস্টারমাইন্ড হচ্ছেন এই হোয়াইট উইডো।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি একটি নিয়োগ কর্মশালারও আয়োজন করেছিল সামান্থা লিউথওয়েট। সেখানে সামান্য টাকার লোভ দেখিয়ে গরিব ও হতদরিদ্র পরিবার থেকে কিশোর-কিশোরীদের আত্মঘাতী জঙ্গি হিসেবে নিয়োগ করে প্রাক্তন সেনাকর্মীর কন্যা সামান্থা। এরপর ওই কচিকাঁচাদের শরীরে মাদকের এমন নেশা ধরিয়ে দেওয়া হয়, যে তারা ভালমন্দ বিচার করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তখন তাদের আত্মঘাতী জঙ্গি বানিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, যাতে পুলিশ না সন্দেহ করতে পারে।
এমন ভয়ানক জঙ্গিকে ধরতে হিমসিম খাচ্ছে ইন্টারপোলের মতো সংস্থাও। সামান্থার নামে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে প্রায় ২০০টি দেশের পুলিশ।