Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

১৫ বছর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি হুন্দাইয়ে স্বল্পমেয়াদি চুক্তিতে যোগ দিয়েছিলেন পাক সুন-বো। স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী, যোগদানের দুই বছর পর স্টাফ শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার কথা তার। অথচ এখনো চুক্তি ভিত্তিতে কাজ করতে হচ্ছে ৪২ বছরবয়সী পাককে। BN-HC209_skorea_G_20150224035646

পাক বলেন, ‘স্থায়ী কর্মীদের মতো একই কাজ করলেও আমরা তাদের বেতনের ৬০ শতাংশ পাই, অন্যান্য সুবিধাও তেমন দেয়া হয় না। অন্যদিকে উত্পাদন কার্যক্রমে যন্ত্রনির্ভরতা বাড়ায় আমরা চাকরির নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত।’

chardike-ad

পাকের মতো বহু শ্রমিক রয়েছেন, যারা দীর্ঘদিন কাজ করলেও এখনো স্থায়ী হতে পারেননি। এরই মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট পার্ক গুন হে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে শ্রমবাজারে সংস্কার করার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, কোরিয়ায় এখন ৬০ লাখ চুক্তিভিত্তিক কর্মী রয়েছে।এ শ্রমিকরাই হবে শ্রম আইন সংস্কারেরপ্রধান চ্যালেঞ্জ।

গত বছরের শেষ তিন মাসে আগের প্রান্তিকের তুলনায় দেশটির প্রবৃদ্ধির হার মাত্র দশমিক ৪ শতাংশ, যা দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে শ্লথ প্রবৃদ্ধি। অর্থনীতিবিদদের মতে, অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে শ্রমবাজার সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।

কোরিয়া এমপ্লয়ারস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক কিম দং-ওক বলেন, কোম্পানির আয় ভালো না হলে স্থায়ী কর্মী পালন বেশ কষ্টকর। সেজন্য বেশির ভাগ কোম্পানি চুক্তিভিত্তিক কর্মীর বিষয়ে বেশি আগ্রহী; কারণ এদের কম বেতন দিতে হয়, অন্যদিকে ছাঁটাই করাও সহজ।

চলতি বছরই শ্রমবাজারে ব্যাপক সংস্কার আনার পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির সরকারের। কোরিয়া সরকার শ্রমিক ছাঁটাই সহজ এবং জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে মজুরি কাঠামো তৈরি করতে চায়। তবে অস্থায়ী শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তাও বৃদ্ধি করা হবে।

সম্প্রতি এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট পার্ক বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির অবস্থা বেশ নাজুক। আমরা যদি নতুন একটি কর্মসংস্থানবান্ধব শ্রমবাজার কাঠামো তৈরি করতে পারি, তবেই নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।’

শ্রমিক সংগঠনগুলোর আশঙ্কা, এ সংস্কার অস্থায়ী শ্রমিকদের চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করবে। এতে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকের সংখ্যা বাড়বে, যাদের আদতে তেমন কোনো অধিকার থাকবে না।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থাভুক্ত (ওইসিডি) দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার অস্থায়ী কর্মীর হার সবচেয়ে বেশি, ৩২ দশমিক ৪ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে দেশটির যুব বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ১১ শতাংশে, যা ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এদিকে এ সংস্কারের বিরুদ্ধে ২৪ এপ্রিল থেকে গাড়ি ও নির্মাণ খাতের দুই লাখের বেশি শ্রমিক ধর্মঘট শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ধর্মঘট বলছে, সংস্কার বাস্তবায়ন সহজ হবে না।

কোরিয়া ইকোনমিক রিসার্চ ইনস্টিউটের গবেষক বুইয়ান ইয়াং-গুই বলেন, সরকার সংস্কার করতে চাচ্ছে ভালো কথা, কিন্তু এমন সব বিভেদ সৃষ্টিকারী ইস্যু নিয়ে আসছে, যা দেশের শ্রম সম্পর্ককে আরো বাজে অবস্থায় নিয়ে যাবে। বণিক বার্তা।