ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে কামারুজ্জামান তার স্ত্রী নূরুন্নাহারকে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ঘোষিত রায়ে মৃত্যু হলে তা হবে শাহাদাতের, সম্মানের। তাই এই মৃত্যুকে ভয় না করতে স্ত্রীকে বলেছেন জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। তিনি বলেছেন, ইসলামী আদর্শের রাজনীতি করার কারণে তার ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধে নয়। তিনি পরিবারের সদস্যদেরকে চিন্তা না করে আল্লাহর ওপর ভরসা করতে বলেছেন।
শনিবার বিকালে প্রতিবেদককে নূরুন্নাহার স্বামীর সঙ্গে কথোপকথনের এ সব তথ্য জানান। তিনি বলেন, কামারুজ্জামান তাকে বলেছেন, আমি কোন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যেতে পারতাম। অসুস্থ হয়েও কত মানুষ মারা যায়। ওই সব মৃত্যুতে কোন সম্মান নেই। গৌরব নেই। তবে সরকারের সাজানো বিচারের এই রায়ে যদি মৃত্যু হয় তা হবে মর্যাদার, গৌরবের।
কামারুজ্জামান স্ত্রীকে আরও বলেছেন, দ্বীন কায়েম করতে হলে রক্ত দিতে হয়। ইসলামের ইতিহাসে তা বারবার প্রমাণ হয়েছে। আমরা ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা রক্ত দিয়ে যাচ্ছি, রক্ত আরও দেবো। রক্ত দিতে হবে, জীবন দিতে হবে, তা জেনে শুনে বুঝে ইসলামী রাজনীতিতে এসেছেন বলে জানান কামারুজ্জামান। তিনি স্ত্রীকে বলেছেন, আমার মৃত্যুর পর তুমি এই পরিবারের অভিভাবক। সন্তানদের ইসলামী আদর্শে উজ্জীবিত রেখো। চিন্তা করো না, হতাশ হয়ো না, আমার মৃত্যুতে দুঃখ পেয়ো না। ধৈর্য ধরো, শক্ত থেকো। মহান আল্লাহর ওপর আস্থা রেখো। একদিন এই জুলুমের আর অত্যাচারের বিচার হবে।
এদিকে ফাঁসি কার্যকরের সময় তিনি ফাঁসির মঞ্চে হেঁটে যান এবং ফাঁসি দেয়ার কয়েক মিনিট আগে জল্লাদের সাথে হেসে হেসে কথা বলেন বলে কারাগার সূত্রে জানা গেছে। এর আগে শেষ খাবার হিসেবে মুরগির মাংস ও ইলিশ মাছ দিয়ে সাদাভাত খেয়েছেন কামারুজ্জামান।
তার আগে গোসল করেন। এরপর কেন্দ্রীয় কারাগারের পেশ ইমাম মো. মনিরুল ইসলাম কনডেম সেলে গিয়ে তাকে তওবা পড়ান। এর আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় তার। রাত ১০ টার পরে কার্যকর করা হয় ফাঁসি