Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
ctg portবাজেটের আগে বিপুল রিকনডিশন্ড গাড়ি আমদানি করে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। সাম্প্রতিক তিন মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতায় এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে সাত হাজার কোটি টাকা। ফলে বাধ্য হয়ে তারা বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানি আপাতত বন্ধ রেখেছেন। বাতিল করা হয়েছে ১ হাজার গাড়ির অর্ডার। অবিক্রীত অবস্থায় দেশের দেড় শতাধিক শো-রুমে পড়ে আছে সাড়ে পাঁচ হাজার গাড়ি। দুই বন্দরে প্রায় আট হাজার গাড়ির স্তূপ। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম কাস্টমস গাড়িগুলো নিলামে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকনডিশন্ড ভেহিক্যাল ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারবিডা) সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল হক চৌধুরী আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় গাড়ি ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন। এরই মধ্যে ক্ষতি হয়েছে সাত হাজার কোটি টাকা। দেশের দুই বন্দরে প্রচলিত দুই নিয়মের গ্যাঁড়াকলে আটকে ব্যবসায়ীদের জরিমানাও গুনতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরে নিলামে তালিকাভুক্ত হলে প্রতিটি গাড়ির জন্য ২৫ হাজার টাকা গুনতে হয়। অথচ মংলা বন্দরে এ নিয়ম নেই। বৈষম্যমূলক এ নীতির অবসানও হচ্ছে না। দুই বন্দরে এখন প্রায় আট হাজার গাড়ির স্তূপ। শো-রুমে আগে থেকে অনেক গাড়ি থাকায় এসব গাড়ি খালাসও করা যাচ্ছে না। আবার তিন মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রায় এক হাজার গাড়ির অর্ডারও বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে এনবিআরে চিঠি দেয়া হয়েছে। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসছে না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশে জাপানের তৈরি রিকনডিশন্ড গাড়ির বিশাল বাজার রয়েছে। ব্যবসায়ীরা আগে শুধু চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি করতেন। আর এখন মংলা বন্দর দিয়েও আমদানি হচ্ছে। রিকনডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীরা জাপান থেকে পাঁচ বছরের পুরনো গাড়ি আমদানি করে দেশে বাজারজাত করেন। প্রতি বছর বাজেটের কয়েক মাস আগে থেকে গাড়ি আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে শুরু হয় আমদানি প্রক্রিয়া। জানুয়ারি থেকে গাড়ি আসা শুরু হয়। এবার জাপানের ইয়েন ও ডলারের মূল্য, একই সঙ্গে জাপানের বাজারে রিকনডিশন্ড গাড়ির মূল্য অনুকূলে থাকায় বিপুল গাড়ির অর্ডার দেয়া হয়। কারণ বাজেটের সঙ্গে গাড়ির শুল্কসহ নানা বিষয় যুক্ত থাকায় ব্যবসায়ীরা আগেভাগে গাড়ি আনার কাজটি সেরে নেন। সে হিসেবে তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে তিন হাজারেরও বেশি এবং মংলা বন্দরে প্রায় ৫ হাজার ৭০০ গাড়ি আমদানি হয়েছে।

স্বাভাবিক নিয়মে একটি গাড়ি আমদানির পর বন্দর থেকে ওই গাড়ি ৩০ দিনের মধ্যে খালাস করতে হয়। এর মধ্যে কোনো গাড়ি খালাস না হলে কাস্টমস থেকে গাড়ির মালিককে ১৫ দিনের মধ্যে গাড়ি খালাসের জন্য চিঠি দেয়া হয়। এতেও কাজ না হলে গাড়িগুলো নিলামে তোলা হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিয়ম মতে, নিলামে ওঠা প্রতিটি গাড়ির জন্য জরিমানা গুনতে হয় ২৫ হাজার টাকা করে। যা মংলা বন্দরে কার্যকর নয়।

chardike-ad

জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক আন্দোলনে রাস্তায় একের পর এক গাড়িতে আগুন লাগানো ও ভাংচুর শুরু হলে গাড়ি ব্যবসায় বিপর্যয় নেমে আসে। ভয়ে কেউ গাড়ি কিনতে চাইছে না। ঢাকা-চট্টগ্রামে দেড়শ’ শো-রুমে পড়ে আছে অবিক্রীত গাড়ি। বিক্রি না হওয়ায় বন্দরের ইয়ার্ডে পড়ে থাকা গাড়িগুলোও খালাস করছেন না ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে বর্তমানে প্রায় আট হাজার গাড়ির স্তূপ রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে তিন হাজার আর মংলা বন্দরে প্রায় পাঁচ হাজার গাড়ি পড়ে আছে। সময়মতো গাড়ি না নেয়ার ফলে দুই বন্দরেই এখন ডেমারেজ গুনছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিটি গাড়ির জন্য ৪৫০ টাকা করে এরই মধ্যে ১৫ কোটি টাকার ডেমারেজও দিতে হয়েছে। আলোকিত বাংলাদেশ।