অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশে জাপানের তৈরি রিকনডিশন্ড গাড়ির বিশাল বাজার রয়েছে। ব্যবসায়ীরা আগে শুধু চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি করতেন। আর এখন মংলা বন্দর দিয়েও আমদানি হচ্ছে। রিকনডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীরা জাপান থেকে পাঁচ বছরের পুরনো গাড়ি আমদানি করে দেশে বাজারজাত করেন। প্রতি বছর বাজেটের কয়েক মাস আগে থেকে গাড়ি আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে শুরু হয় আমদানি প্রক্রিয়া। জানুয়ারি থেকে গাড়ি আসা শুরু হয়। এবার জাপানের ইয়েন ও ডলারের মূল্য, একই সঙ্গে জাপানের বাজারে রিকনডিশন্ড গাড়ির মূল্য অনুকূলে থাকায় বিপুল গাড়ির অর্ডার দেয়া হয়। কারণ বাজেটের সঙ্গে গাড়ির শুল্কসহ নানা বিষয় যুক্ত থাকায় ব্যবসায়ীরা আগেভাগে গাড়ি আনার কাজটি সেরে নেন। সে হিসেবে তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে তিন হাজারেরও বেশি এবং মংলা বন্দরে প্রায় ৫ হাজার ৭০০ গাড়ি আমদানি হয়েছে।
স্বাভাবিক নিয়মে একটি গাড়ি আমদানির পর বন্দর থেকে ওই গাড়ি ৩০ দিনের মধ্যে খালাস করতে হয়। এর মধ্যে কোনো গাড়ি খালাস না হলে কাস্টমস থেকে গাড়ির মালিককে ১৫ দিনের মধ্যে গাড়ি খালাসের জন্য চিঠি দেয়া হয়। এতেও কাজ না হলে গাড়িগুলো নিলামে তোলা হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিয়ম মতে, নিলামে ওঠা প্রতিটি গাড়ির জন্য জরিমানা গুনতে হয় ২৫ হাজার টাকা করে। যা মংলা বন্দরে কার্যকর নয়।
জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক আন্দোলনে রাস্তায় একের পর এক গাড়িতে আগুন লাগানো ও ভাংচুর শুরু হলে গাড়ি ব্যবসায় বিপর্যয় নেমে আসে। ভয়ে কেউ গাড়ি কিনতে চাইছে না। ঢাকা-চট্টগ্রামে দেড়শ’ শো-রুমে পড়ে আছে অবিক্রীত গাড়ি। বিক্রি না হওয়ায় বন্দরের ইয়ার্ডে পড়ে থাকা গাড়িগুলোও খালাস করছেন না ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে বর্তমানে প্রায় আট হাজার গাড়ির স্তূপ রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে তিন হাজার আর মংলা বন্দরে প্রায় পাঁচ হাজার গাড়ি পড়ে আছে। সময়মতো গাড়ি না নেয়ার ফলে দুই বন্দরেই এখন ডেমারেজ গুনছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিটি গাড়ির জন্য ৪৫০ টাকা করে এরই মধ্যে ১৫ কোটি টাকার ডেমারেজও দিতে হয়েছে। আলোকিত বাংলাদেশ।