Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আবু হাসানঃ 

chardike-ad

ঢাকা ভার্সিটির কথা চিন্তা করুন। ওখানে রাজনীতির প্রধান নিয়ামক-ই হল হলের সিট বানিজ্য। ওখানে সিট বরাদ্দের মাধ্যমে টাকা নয়, আসে নিরিহ ও নিরুপায় ছাত্রদের আনুগত্য, যা কাজে লাগিয়েই ছাত্রনেতারা হন শক্তিশালী। যদি ঢাকা ভার্সিটির আবাসন সমস্যা সম্পূর্ণ দূর হতো তাহলে হলের সিট নিয়ে রাজনীতি করা সম্ভব হত না। নবীন ছাত্রদেরকে সি্টের জন্য নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হত না। রাজনীতিতে যোগদান করাটা হত না বাধ্যতামূলক। একটু ভাবুন তো, ঢাবি কি পারে না তাদের আবাসন সমস্যা সম্পুর্ণ দূর করতে? পর্যাপ্ত হল নির্মাণ করতে? তাহলে কেন করছে না…? কারন ঢাবির ছাত্র রাজনীতি-ই হল রাজধানী তথা সারা দেশের ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতির চালিকাশক্তি। এখানে রাজনৈতিক শক্তির উপস্থিতি ও নেতাদের আনুগত্য যেকোন মূল্যে রক্ষা করতে হবে। 
বুয়েটে ছাত্রদের আবাসন সমস্যা শুরু হয়েছে ২০০৫ থেকে। তখন আমরা থাকতাম হলের লাইব্রেরীতে। এবছর দেখলাম, রশিদ হলের মসজিদ আর কমন রুমের সিংহভাগ জায়গা পার্টিশন দিয়ে কিছু ছাত্রদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে… বুয়েট কর্তৃপক্ষ কেন নিজেদের বৈধ জমি সিটি কর্পোরেশনের কাছ থেকে দখলমুক্ত করে আবাসন সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করছে না বা করতে পারছে না…? 

বাধ্য না হলে একজন বুয়েট ছাত্র কখন রাজনীতিতে আসতে পারে? যদি সেটা তার নেশা হয়ে থাকে অথবা রাজনীতি থেকে সে বিশেষ সুবিধা পায়, যেমন বিনোদন, কাঁচা টাকা, চাকরির নিশ্চয়তা ইত্যাদি। আমরা এক্ষেত্রে অনেক সৌভাগ্যবান। বিনোদনের অসংখ্য উপায় আমাদের আছে। টিউশনি করলে হাত খরচের থেকে একটু বেশি-ই পাওয়া যায়। আর রেজাল্ট যেমন-ই হোক, পাশ করতে পারলে দেশে বা বিদেশে সুন্দর ক্যারিয়ার আছেই। তারপরও কেন কিছু ছেলে পড়াশোনা একেবারে বাদ দিয়ে রাজনীতি করে? আমি বলবো, প্রধানত motivation এর অভাব। যে লেদ মেশিন ঢোলাই খাল ছাড়া সারা দুনিয়াতে আর কোথাও পাওয়া যায় না, আমরা এখনো তার motion transfer logic পড়ি। এসব কারনে যদি কেউ motivation হারায় তাহলে তাকে আমরা কিভাবে দোষ দেই? কেন তাঁরা (শিক্ষক ও সরকার) আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা কে যুগপযোগী করার উদ্যোগ নেন না? 

আসলে সরকারও চায় Engineering excellence বাদ দিয়ে আমরা চর্চা করি political adulation। যার প্রমাণ, রাজনৈতিক বিবেচনায় ভিসি-DSW নিয়োগ, প্রো-ভিসি পদ সৃষ্টি… কিছু শিক্ষকদের রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি… আরও কত কি… 

ছোট বেলায় পড়েছিলাম, 
‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে 
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে’ 

যেভাবে এদেশের সর্বস্তরে গালভরা কথা আর মিথ্যা আশ্বাসের সম্মান দেওয়া হয়, তাতে করে হয়তো সেই ছেলের আর জন্মই নেওয়া হবে না। বুয়েট তো খুব ক্ষুদ্র জায়গা।

(লেখকঃ সাবেক বুয়েটিয়ান)