Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

mobileমোবাইল ব্যবহারের ওপর নতুন করে সারচার্জ আরোপ করার জন্য উন্নয়ন সারচার্জ ও লেভি আইন ২০১৫ এর খসড়া ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের একথা জানান।

chardike-ad

জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে মোবাইলে কথা বলার ওপর ১ শতাংশ হারে সারসার্জ আরোপ করা হবে। পরে এই চার্জ মোবাইলে ইন্টারনেটসহ যাবতীয় সেবার ওপর আরোপ হতে পারে। কথা বলার ওপর সারচার্জ আরোপ করা হলে এ খাত থেকে বছরে অতিরিক্ত প্রায় ১৫০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে মোবাইল ফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর রয়েছে। এটি গ্রাহকদের কাছ থেকে কেটে রাখা হয়।

সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর এখন এটি আইনে পরিণত করার জন্য জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হবে। সংসদে তা অনুমোদন পেলে এটি আইনে রূপান্তরিত হবে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, আগামী ১ এপ্রিল থেকে এটি কার্যকর করা হবে। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে সারসার্জ আরোপের মাস পিছিয়ে যাচ্ছে। এটি মে অথবা জুন মাস থেকে কার্যকর করা হতে পারে। মোবাইলে কথা বলার ওপর ১ শতাংশ হারে সারসার্জ আরোপ করা হলে বছরে সরকার এ থেকে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব পাবে। এই অর্থ দেশের স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে ব্যয় করা হবে। পরে মোবাইলে অন্যান্য খাত থেকে সারচার্জ আরোপ করা হলে রাজস্ব আদায়ের অঙ্ক ২০০ কোটি টাকায় উত্তীর্ণ হবে।
চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেট পাসের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত কথা বলা নিরুৎসাহিত করার জন্য এর ওপর সার্ভিস চার্জ আরোপের প্রস্তাব করেন।

এর পর অর্থমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী এনবিআরের পক্ষ থেকে সারচার্জ আরোপসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রীকে পাঠানো হয়। কিন্তু এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং (মতামত) নেয়া হলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, কোনো বিধিবদ্ধ আদেশ দিয়ে সারচার্জ আরোপ করা যায় না। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আইনের প্রয়োজন রয়েছে। আইন করার আগে মন্ত্রিসভায় প্রস্তাবটি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। পরে তা আইনে রূপান্তরের জন্য সংসদে উত্থাপন ও পাস করা দরকার রয়েছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ওপর ভিত্তি করে একটি প্রস্তাব এনবিআরের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীর সম্মতির জন্য গত সপ্তাহে পাঠানো হয়। অর্থমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবে সম্মতি দেয়ার পর তা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এখন এ প্রস্তাবটি আজকে অনুষ্ঠিত কেবিনেট মিটিংয়ে উত্থাপন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।

জানা গেছে, প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন করা হলে মোবাইল অপারেটরা গ্রাকদের কাছ থেকে মোবাইলে কথা বলার ওপর ১ শতাংশ হারে চার্জ কেটে পৃথক একটি হিসাবে জমা রাখবে। পরে এই অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হবে। বিটিআরসির জানুয়ারি মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোনের গ্রাহকের সংখ্যা রয়েছে ১২ কোটি ১৮ লাখ ৬০ হাজার। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের পাঁচ কোটি ১৫ লাখ, বাংলালিংক তিন কোটি ১১ লাখ, রবি দুই কোটি ২৬ লাখ, এয়ারটেল ৭৭ লাখ, টেলিটক ৩৯ লাখ এবং সিটিসেল ১২ লাখ। মোবাইলে কথা বলাসহ বিভিন্ন সেবা ব্যবহার করার ফলে গ্রাহকদের বছরে ব্যয় হয় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে মোবাইল ফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর রয়েছে। এটি গ্রাহকদের কাছ থেকে কেটে রাখা হয়।

মোবাইলে কথা বলার ওপর সারচার্জ আরোপের প্রস্তাবের বিষয়ে গ্রাহকদের মিশ্র মতামত পাওয়া গেছে। কয়েকজন গ্রাহক এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও এটি আরোপের পদ্ধতির ওপর প্রশ্ন আরোপ করেছেন। তারা বলেছেন, মোবাইলে প্রথম ৫ মিনিট কথা বলার ওপর কোনো সারচার্জ আরোপ করা সমীচীন নয়। ৫ মিনিটের পর যদি কেউ কথা বলতে চান তবে সে ক্ষেত্রেই ১ শতাংশ হারে চার্জ আরোপ করা যেতে পারে। অনেকে আবার সারসার্জ আরোপ করা হলে মোবাইল সেবার ওপর ভ্যাট কমানোরও প্রস্তাব করেন।