South-Korean-Flagদক্ষিণ কোরিয়াও অবশেষে চীনের নেতৃত্বাধীন এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকে (এআইআইবি) যোগদানের সিদ্ধান্ত নিল। ওয়াশিংটনকে উপেক্ষা করে দক্ষিণ কোরিয়াই যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ মিত্র দেশ, যারা এ নতুন উন্নয়ন ব্যাংকটিতে যোগদান করতে যাচ্ছে। খবর ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কেরিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, আঞ্চলিক প্রবৃদ্ধি জোরদার এবং আর্থিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা শক্তিশালী করার উদ্দেশ্য নিয়ে এআইআইবি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। ব্যাংকটিতে যোগদানে কোরিয়ার সিদ্ধান্ত নির্মাণ, টেলিযোগাযোগ ও পরিবহন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য দেশটির কোম্পানিগুলোর জন্য নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।

chardike-ad

১২ মার্চ ব্রিটেনের মতো যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র এআইআইবিতে যোগদানের ঘোষণা দেয়ার পর ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী অর্থনীতিগুলো এ কাতারে শামিল হতে থাকে। এর আগে ব্যাংকটির প্রশাসন নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাতে যোগ না দেয়ার জন্য মিত্র দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

কিন্তু সিউলের এ সিদ্ধান্তের পেছনে বোঝা যাচ্ছে চীনের সঙ্গে নিজেদের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে দক্ষিণ কোরিয়া কতটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। গত বছর দেশটির মোট রফতানির এক-চতুর্থাংশের গন্তব্য ছিল চীন, বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে মাত্র ১২ শতাংশ। ১৯৪৫ সালে দুই কোরিয়ার বিভাজনের পর মার্কিন সামরিক শক্তির ওপর দক্ষিণ কোরিয়া নির্ভরশীল হওয়ার পরেও চীনের প্রতি অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতার কারণে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সিউলের সম্পর্ক ক্রমেই জটিল হচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স ব্যুরোর প্রধান চোই হি-নাম বলেন, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে যোগ দিলে ব্যাংকটিতে মূলধনি চাঁদা প্রদানে দক্ষিণ কোরিয়া অনেক স্বাধীনতা পাবে। এআইআইবিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া উন্নত করার জন্য চীনের ওপর চাপ দিয়ে আসছিল দক্ষিণ কোরিয়া, আর চোই হি-নাম জানাচ্ছেন, সে পদক্ষেপ নিতে এরই মধ্যে বেইজিং ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এ সপ্তাহে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, আরো সদস্যকে আকর্ষণ করার জন্য চীন এআইআইবিতে ভেটো প্রদান ক্ষমতা রহিত করতে যাচ্ছে।

আগামী জুনে ব্যাংকটিতে যোগদান নিয়ে চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা করছে দক্ষিণ কোরিয়া। তবে চলতি বছরের শেষ নাগাদ এ ব্যাপারে দেশটির পার্লামেন্ট থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন আদায় করা হবে।

যোগ দিলে চীন ও ভারতের পর দক্ষিণ কোরিয়াই হবে এআইআইবিতে তৃতীয় শীর্ষ আঞ্চলিক অর্থনীতি। সিউলের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত আসার পর এখন সবার নজর অস্ট্রেলিয়ার দিকে। অতি সম্প্রতি দেশটি এআইআইবিতে যোগদানে পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত জানালেও এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবে দেশটির বাণিজ্য ও বিনিয়োগমন্ত্রী অ্যান্ড্রু রব বলেছেন, ‘আমার কোনো সন্দেহ নেই যে অচিরেই আমরা ব্যাংকটিতে যোগদান করতে যাচ্ছি।’