ভালোবাসার পাত্রী ছিল নীচজাতের৷ সেই ‘অপরাধেই’ ১৭ বছর বয়সি এক কিশোরকে
নগ্ন করে ঘোরানো হল গ্রামে৷ নিগ্রহের শিকার হতে হলো তার পরিবারকেও৷ শুক্রবার
ভারতের মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলার রাহুরি তহশিলের ভামবোরি গ্রামে এই ঘটনার জেরে
উত্তেজনা তৈরি হয়৷
সূত্রের খবর, শিবম দ্বারকানাথ ভারাদিয়া নামে ওই কিশোরের সঙ্গে গ্রামেরই একটি মেয়েরসম্পর্ক রয়েছে৷ ঘটনাচক্রে শিবম ব্রাহ্মণ এবং কিশোরীটি মালি সম্প্রদায়ভুক্ত৷ গ্রামবাসীদেরএকাংশের মধ্যে এই সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি ছিল৷
গত শুক্রবার হায়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষা দিতে মেয়েটি আহমেদনগর শহরে গিয়ে সন্ধেবেলাতেও না-ফিরলে, তার আত্মীয়রা কয়েকশো লোককে নিয়ে ছেলেটির বাড়িতে চড়াও হয়৷ অভিযোগ, শিবমের পাশাপাশি তার মা, বাবা, কাকু এবং বোনদের ব্যাপক মারধর করে তারা৷ ঘরের মধ্যে ওই কিশোরের বাবার জামাকাপড় সব খুলে ফেলা হয়৷ আর শিবমকে বাড়ির বাইরে নিয়ে গিয়ে নগ্ন করে গাধার পিঠে চাপিয়ে দেয় তারা৷ গলায় জুতোর মালা পরিয়ে ওই অবস্থাতেই সারা গ্রামে মিছিল করে ঘোরানো হয় শিবমকে৷
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, উপস্থিত জনতার অধিকাংশই তখন নিজেদের মোবাইল ফোনে তার ভিডিয়ো তুলতে ব্যস্ত ছিলেন! খবর পেয়ে ভামবোরির পঞ্চায়েত প্রধান এবং তাঁর সঙ্গীসাথীরা তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌছে ওই নাবালককে উদ্ধার করেন৷ ততক্ষণে পুলিশও সেখানে পৌঁছে যায়৷ উন্মত্ত জনতাকে সরাতে লাঠিচার্জও করে তারা৷ ইতিমধ্যে স্থানীয় আলেফাতা গ্রামে মেয়েটির সন্ধান মেলে৷ তাকে ভামবোরিতে ফিরিয়ে আনা হয়৷ আহত শিবম এবং তাঁর পরিবারের লোকজনকে রাহুরি টাউনের এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ অন্য একটি সূত্রের খবর, শিবমের মোবাইল ফোন ওই কিশোরীর কাছে পেয়েই তার বাড়ির লোক ক্ষেপে ওঠে৷
রাহুরি থানার ইন-চার্জ সঞ্জয় পাটিল জানান, ঘটনাস্থল থেকে তিন মহিলা-সহ মোট ১৭ জনকে খোঁজেও তল্লাশি চলছে৷ আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় আদালত৷ ভামবোরিতে এখনও ১০০ জন পুলিশকর্মী এবং র্যাফের একটি দল মোতায়েন রয়েছে৷