জিম্বাবুয়ের হয়ে শেষ ওয়ানডে খেলছেন ব্রেন্ডন টেলর। তাই হয়তো আবেগটা একটু বেশিই। এমন এক আবেগঘন ম্যাচে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট ইতিহাসে নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে প্রথম কোনো জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটার হিসেবে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন। শুধু তাই নয়, বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীদের তালিকায় তিনি উঠে এসেছেন তৃতীয় স্থানে। বিশ্বকাপে ১২টি ছক্কা হাঁকিয়ে সর্বোচ্চ ছ্ক্কা হাঁকানো ব্যাটসম্যানদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছেন।
৭ মার্চ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১২১ রানের ইনিংস খেলেন টেলর। এরপর ভারতের বিপক্ষে ব্যাট হাতে রীতিমতো তাণ্ডব চালান তিনি। তুলে নেন ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি। মাত্র ১১০ বল খেলে ১৩৮ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। যেখানে ১৫টি চার ও ৫টি ছক্কার মার ছিল।
তিনিই একমাত্র জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটার, যিনি বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এর আগে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মার্ক ওয়াহ টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানোর রেকর্ড গড়েছিলেন। এবার সেই রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছেন টেলর। এর আগে বাংলাদেশের মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করে মার্ক ওয়াহর রেকর্ড ছুঁয়েছেন।
ব্যক্তিগত ১৩৮ রানের মাথায় মোহিত শর্মার বলে শেখর ধাওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। বিদায়ী এই ব্যাটসম্যানকে অভিনন্দন জানান ভারতের ব্যাটসম্যানরা। অভিনন্দন জানান সতীর্থরা। আর শেষবারের মতো স্বদেশি দর্শকদের উদ্দেশে ব্যাট উঁচিয়ে ধরেন। এ সময় তার চোখে-মুখ লাল হয়ে উঠতে দেখা যায়। হয়তো শেষ ম্যাচে আবেগী হয়ে উঠেছেন টেলর। ড্রেসিং রুমে ফিরে হয়তো কান্নাও করেছেন। তার চোখে-মুখে যে কান্নার স্পষ্ট ছাপ লক্ষ্য করা গেছে।
বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে রাখলেন টেলর। চলতি বিশ্বকাপে প্রতি ম্যাচেই তিনি রান পেয়েছেন। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪০ রান করেন। আরব আমিরাতের বিপক্ষে করেন ৪৭ রান। ৩৭ রান করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। পাকিস্তানের বিপক্ষে করেন ৫০ রান। এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১২১ ও ভারতের বিপক্ষে ১৩৮ রানের ইনিংস খেলেন। বিশ্বকাপের ৬ ম্যাচে তার সংগ্রহ ৪৩৩ রান।
বিদায়ের আগে এমন পারফরম্যান্স খুব কম খেলোয়াড়ই করতে পারেন। নিঃসন্দেহে টেলরকে অনেক দিন মনে রাখবে জিম্বাবুয়ে।