পাসপোর্টের মেয়াদ দিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এক্ষেত্রে মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হচ্ছে।
তবে একই সাথে নাগরিক দের এর জন্য গুনতে হবে বাড়তি টাকাও। জরুরি ও সাধারণ উভয় পাসপোর্টের ফি বাড়ানো হচ্ছে এক হাজার টাকা করে।
এছাড়া কমানো হচ্ছে অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল পাসপোর্ট ব্যবহারের মেয়াদ। আর এই বিষয় গুলো খোলসা করে শিগগিরই এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করতে যাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বহিরাগমন ও নিরাপত্তা) মোস্তফা কামাল উদ্দিন জানান, পুরো বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শিগগিরই তা চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এটি কার্যকর হলে অনিয়ম ও দুর্নীতির পাশাপাশি মানুষের হয়রানি কমবে।
বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশের ৪৯টি জেলায় মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) আবেদন জমা নেয়া হয়। তা অনলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় প্রিন্ট করে সংশ্লিষ্ট জেলায় পাঠানো হয়।
এসব ইস্যুকৃত পাসপোর্টের মেয়াদ পাঁচ বছরের। বিভিন্ন মহল থেকে এ মেয়াদ ১০ বছর করার প্রস্তাব করা হয় সংশ্লিষ্ট দফতরে। বিষয়টি নিয়ে গত বছরের ১৪ অক্টোবর বৈঠকে বসে এ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি।
ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিকের পাসপোর্টের মেয়াদ পাঁচ থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হবে। মেয়াদ বাড়ানো হলে বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ ও মেয়াদ সহজ এবং সাশ্রয়ী হবে। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্ট ফি সাধারণ চার হাজার এবং জরুরি ক্ষেত্রে সাত হাজার টাকা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়- সরকারি কর্মকর্তারা পিআরএলে যাওয়ার দিন থেকে শুরু করে এক বছর ছয় মাস (১৮ মাস) পর্যন্ত অফিসিয়াল পাসপোর্ট প্রাপ্ত হবেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ইচ্ছা করলে ওই সময়ের মধ্যে তার অফিসিয়াল পাসপোর্ট পরিবর্তন করে সাধারণ পাসপোর্ট গ্রহণ করতে পারবেন। এ বিষয়ে বৈঠকে বলা হয়- বিভিন্ন সময়ে পিআরএল ভোগকারী কর্মকর্তারা তিন/চার বছর পর্যন্ত অফিসিয়াল পাসপোর্ট ব্যবহার করে থাকেন।
ফলে ইমিগ্রেশনে সরকারি আদেশ নিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। ওই বৈঠকে পাসপোর্টের পাতার সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে বলা হয়- বর্তমানে পাসপোর্টের ৪৮টি পাতা সংযোজিত রয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। পাতার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন মহল থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, এরই মধ্যে ৫৫ মিলিয়ন পাসপোর্ট বুকলেট আমদানির চুক্তি হয়েছে। তাই এ মুহূর্তে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া বাংলাদেশ ফ্রিকুয়েন্ট ফ্লাইয়ার এর সংখ্যা নগণ্য হওয়ায় বর্তমান পাসপোর্টই যথেষ্ট বলে মত দেন তিনি।
এ বিষয়ে পাসপোর্ট অধিদফতরকে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলা হলে তারা পাসপোর্টের পাতা না বাড়ানোর পক্ষে মত দেয়। ফলে আপাতত পাসপোর্টের পাতা বাড়ছে না।