যৌক্তিক পরিণতিতে না পৌঁছানো পর্যন্ত ২০ দলীয় জোটের চলমান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, দেশ আজ গভীর সঙ্কটে। এই সঙ্কটের মূলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। আর নির্দিষ্ট করে বললে এই সঙ্কটের মূলে শেখ হাসিনা। গণতান্ত্রিক পন্থায় সঙ্কট নিরসনের সব পথ রুদ্ধ করে ফেলেছে বর্তমান সরকার। গত বছরের ৫ জানুয়ারি ভোটছাড়া নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের নাম নিশানা মুছে ফেলেছে। মানুষের সমর্থন ছাড়া দেশ পরিচালনার নৈতিক অধিকার বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের নেই।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
লাগাতার অবরোধ ডেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে গত দুই মাস ধরে গুলশানের এ কার্যালয়ে অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কার্যালয়ে প্রবেশে কড়াকড়ি থাকলেও সংবাদ সম্মেলনের কারণে শুক্রবার দুপুরের পর থেকে সাংবাদিকদের গুলশান ২ নম্বর সেকশনের ৮৬ নম্বর সড়কে খালেদা জিয়ার ওই কার্যালয়ে ঢুকতে দেয় পুলিশ। ৫৩ দিন আগে গত ১৯ জানুয়ারি এই কার্যালয়েই খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন। এরপর একাধিকবার দলের শীর্ষ নেতাদের মাধ্যমে বিবৃতি পাঠালেও তিনি সাংবাদিকদের সামনে আসেননি।
খালেদা জিয়া বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে সরকারের পক্ষে বলা হয়েছিল- সাংবিধানিক ধারা রক্ষায় এটি নিয়মতান্ত্রিক নির্বাচন। কিন্তু তারা একতরফা নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সেটি অস্বীকার করেছে। সরকার কারসাজির মাধ্যমে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার ষড়যন্ত্র করছে। সরকার জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
তিনি বলেন, সঙ্কট নিরসনে আমরা সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। শেখ হাসিনার কথায় বিশ্বাস করে আমরা নতুন সরকার আসার পর কর্মসূচি দেইনি। কিন্তু আমাদের সে সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল, তা আমরা অচিরেই বুঝতে পেরেছি। যৌক্তিক পরিণতিতে না পৌঁছানো পর্যন্ত ২০ দলীয় জোটের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, আন্দোলনে জনগণের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে আমরা অবহিত। তাদের কষ্টও আমরা বুঝি। সরকারের কাছে কাছে ক্ষমতায় টিকে থাকায় মূল লক্ষ্য।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যক্তির আন্দোলন নয়। কোনো দলের বিরুদ্ধে দলের আন্দোলন নয়। এই আন্দোলন দেশবাসীর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলন। এজন্য আমি দেশবাসীকে সাময়িক এই ক্ষতি মেনে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, উপদেষ্টা আবদুল কাইউম, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল প্রমুখ।