ঐতিহ্যবাহী কোরিয়ান খাবার ‘খিমছি’র বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা যখন দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তখন খোদ কোরিয়াতেই অস্তিত্ব সংকটে পড়তে চলেছে কোরীয়দের নিত্যদিনের আহারে এই অপরিহার্য অনুষঙ্গটি। বিশেষ করে কোরিয়ার নতুন প্রজন্ম খাবারটির প্রতি আশংকাজনক হারে আগ্রহ হারাচ্ছে। আর এর কারণ হিসেবে মূলত দায়ী করা হচ্ছে চীন থেকে আমদানি হওয়া নিম্নমানের ‘নকল’ খিমছিকে।
সিউলে ঘুরতে যাওয়া বিদেশী পর্যটকদের ঘরে বসে খিমছি তৈরির কৌশল শেখান কুওন সং হি। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলছিলেন তাঁর হতাশার কথা, “এটা লজ্জার যে আমাদের খিমছির অনেকটাই এখন চীন থেকে আসছে। এগুলো সস্তা, নিম্মমানের এবং কোনভাবেই আমাদের দেশে তৈরি খিমছির স্বাদের ধারেকাছে নেই।”
২০০৬ সালে কোরিয়ায় খাবারটির বিপুল চাহিদা সামাল দিতে চীনা খিমছি আমদানি শুরু হয়। আর তখন থেকেই ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে এর প্রতি অপেক্ষাকৃত তরুণদের আগ্রহ। তা সত্ত্বেও প্রতি বছর কোরিয়ায় গড়ে ২০ লাখ খিমছি বেচাকেনা হয়। কোরিয়ার মোট জনসংখ্যার ৯৫ শতাংশই প্রতিদিন অন্তত একবার এটি খেয়ে থাকেন।
কিন্তু বিশেষজ্ঞদের আশংকা এভাবে নিম্নমানের চীনা খিমছিতে বাজার সয়লাব হতে থাকলে কোরিয়ান খিমছির অস্তিত্ব সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ানের ভাষ্য অনুসারে স্বদেশে খিমছির এমন দুর্দিনে কোরিয়ান খাবারটি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বহির্বিশ্বের বাজার। লন্ডন থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস সর্বত্রই রেস্টুরেন্টগুলোতে খিমছির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তায় ২০১৩ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন খাবারটিতে বর্ষসেরা ১০ আইটেমের একটি হিসেবে ঘোষণা করে।