samsung-electronics_200x200কয়েক বছর ধরে অব্যাহত মুনাফার ধারায় রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। সেলফোনের বাজারে শীর্ষ প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টে জমা  হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। বিপুল এ অর্থ খরচ করে কোম্পানিটি অন্য প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণে মনোযোগী হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর টেলিগ্রাফ।

গত দুই বছরে স্যামসাং ১০টি কোম্পানি অধিগ্রহণ করে। অবশ্য এতে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল তুলনামূলক কম। এবার তারা অধিগ্রহণে বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগ সম্পর্ক বিভাগের প্রধান রবার্ট ই এ তথ্য জানান।

chardike-ad

স্যামসাংয়ের সাফল্যে শেয়ারপ্রতি মুনাফা বাড়ার সম্ভাবনায় শেয়ারহোল্ডাররাও আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। গত বছর ৪০ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেয় স্যামসাং। ২০০৭ সালের পর গত বছরই প্রতিষ্ঠানটি প্রথমবারের মতো শেয়ার বাইব্যাক করে। তবে এ বছর স্যামসাং একই হারে লভ্যাংশ দিতে পারবে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। কেননা টানা তিন বছর মুনাফায় প্রবৃদ্ধির পর গত বছরই এতে ভাটা পড়ে। এখন অধিগ্রহণকেই প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর উপায় হিসেবে বিবেচনা করছে গ্যালাক্সি সিরিজের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। গত বছর প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পায়। তিন বছরের মধ্যে এই প্রথম স্যামসাংয়ের মুনাফা কমে। মূলত মোবাইল ডিভাইস খাতে খুব বেশি সুবিধা করতে না পারার কারণে মুনাফা এ সময়ে কমে। এ কারণে কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানটি এখন ব্যবসার ক্ষেত্র বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। আর এতে অধিগ্রহণ ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। স্যামসাংয়ের বর্তমান সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো অধিগ্রহণেই প্রাধান্য দেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়।

শেয়ার লভ্যাংশ কমার ইঙ্গিত দিয়ে রবার্ট ই জানান, আগের বছরের মতো এ বছর বিনিয়োগকারীদের একই হারে লভ্যাংশ দেয়া হবে, এ কথা ভাবা উচিত হবে না। কারণ এ বছর তারা প্রবৃদ্ধিতে মনোনিবেশ করতে যাচ্ছে। রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি আরো জানান, লভ্যাংশসহ সংশ্লিষ্ট আরো অনেক সেবাই প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগকারীদের দিয়ে থাকে। এ বিষয়ে তারা সচেতনও আছেন। কিন্তু এ বছর ব্যবসার প্রবৃদ্ধিকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হবে।

অধিগ্রহণে স্যামসাংয়ের সুনাম অনেক পুরনো। দুই বছরে তারা ১০টি প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ করেছে। কিন্তু এ অধিগ্রহণের অধিকাংশ ছিল তুলনামূলক ছোট। এখন অনেক বিনিয়োগকারী প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বড় কোম্পানি অধিগ্রহণে মনোনিবেশে তাগিদ দিচ্ছেন। রবার্ট ই বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে মার্জার অ্যান্ড একুইজিশন (এমঅ্যান্ডএ) চুক্তিকে প্রাধান্য দিচ্ছি। আর বড় এমঅ্যান্ডএ চুক্তি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’

স্যামসাংয়ের কাছে গত বছরের শেষ নাগাদ ছিল প্রায় ৬১ লাখ ৮০ হাজার কোটি ওন (৫ হাজার ৬০০ কোটি ডলার)। যেহেতু তারা গত বছর মুনাফা বাড়াতে পারেনি, তাই ধারণা করা হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি বাড়াতে তারা বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। গত বছর শেয়ার বাইব্যাক ও চলতি বছরের লভ্যাংশের বিষয়ে রবার্ট ই সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি।

এদিকে স্যামসাংয়ে যাতে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ে, সেজন্য প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। আইনি সীমাবদ্ধতা থাকায় মার্কিন কোম্পানিগুলো স্যামসাংয়ে সরাসরি বিনিয়োগ করতে পারে না। ২০১৩ সালে তারা ব্যাংক অব আমেরিকার সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ মেরিল লিঞ্চের সঙ্গে একটি প্রোগ্রাম আয়োজন করে। এর মাধ্যমে মার্কিন বিনিয়োগকারীরা স্যামসাংয়ে বিনিয়োগের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু কতটি কোম্পানি তখন বিনিয়োগ করে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানায়নি কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানটি। বণিকবার্তা।