দাবি আদায়ে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের পাশাপাশি ফের সপ্তাহ জুড়ে হরতাল কর্মসূচি দিতে পারে ২০ দলীয় জোট। সরকারকে নতুন করে চাপে রাখতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত লাগাতার হরতাল কর্মসূচি দেয়া হতে পারে বলে জোটের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
এমনকি শুক্রবার ও শনিবার দেশের বিভিন্ন বিভাগে স্থানীয় পর্যায়ে হরতাল পালন করা হতে পারে। যদিও শুক্রবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো’র রুহের মাগফেরাত কামনা করে দেশব্যাপী বাদ জুম্মা দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা আছে।
সূত্রটি জানায়, মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ, ইন্টারনেট, ডিশ লাইন ও ফ্যাক্স সংযোগ বিছিন্ন হওয়ার আগে দলের তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপে আন্দোলনের সব ধরনের কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা দিয়েছেন খালেদা জিয়া।
এমন কি তিনি(খালেদা জিয়া) গ্রেফতার হতে পারেন এমন শঙ্কায় আন্দোলন পরবর্তী নির্দেশনাও দিয়েছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
ফলে বেগম খালেদা জিয়া গ্রেফতার হলেও দাবি আদায়ের আন্দোলন থেকে পিছপা হবে না, বরং আন্দোলন আরো বেগবান হবে। আন্দোলন কেন্দ্রে নয়, আন্দোলন এখন তৃণমূলে ছড়িয়ে গেছে বলেও মনে করে দায়িত্বশীল সূত্রটি।
বিএনপির একজন দায়িত্বশীল নেতা জানান, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলমান আন্দোলন কোনো ক্রমেই বন্ধ হবে না। বরং চলমান আন্দোলনকে এক দফার অসহযোগ আন্দোলনে পরিণত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অনির্দিষ্টকালের অবরোধ, আন্দোলন কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রয়োজনে রাজধানী ঢাকাকে সারা দেশ থেকে জল, স্থল ও রেল পথে পুরোপুরি বিছিন্ন করা হবে’।
অপর এক সূত্র জানায়, দলের নীতি-নির্ধারণী মহলের আশঙ্কা-কর্মসূচি থেকে সরে গেলে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা চরম বিপদে পড়বে। গুম, খুন বা অপহরণের মতো ঘটনার শিকার হতে পারেন নেতা-কর্মীরা। তাছাড়া তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ৩ জানুয়ারি থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। দল ও জোটের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচিতে বাধা পেয়ে ৫ জানুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। যদিও এ অবস্থানকে ক্ষমতাসীনরা একেক সময় একেক নামে আখ্যা দিয়েছেন।
সর্ব শেষ তথ্য মতে, বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে গত ৩ জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান করছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, সাবেক আইজিপি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ কাইয়ূম, বিশেষ সহকারি অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদারসহ বেগম জিয়ার অফিস স্টাফ ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সদস্যরা।