Avadhnama

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর একটি কার্টুন ভারতের উর্দু পত্রিকা দৈনিক আওয়াধনামা তে প্রকাশের পর বিপাকে পড়েছেন ওই পত্রিকার সম্পাদক। গত ১৭ জানুয়ারি ফরাসি ম্যাগাজিন শার্লি হেবদো তে মুদ্রিত ওই কার্টুনটি ছাপানোর পর বিক্ষোভের মুখে ভারতীয় পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে গেছে।

chardike-ad

ইতোমধ্যে নিজের ভুল স্বীকার করে পত্রিকায় ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। এরপরও তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হয়েছে; মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে গ্রেপ্তারের দাবিতে চলছে বিক্ষোভ।

দৈনিক আওয়াধনামার সম্পাদক শিরিন দালভি বিবিসিকে জানান, কার্টুনটি প্রকাশের পর আমি চাকরিচ্যুত। আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে পালিয়ে আছি। নিজের সন্তানদের সঙ্গেও দেখা করা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ধর্মীয় বিষয়ে বিতর্ক তৈরির উদ্দেশে আমি এটা করিনি। কিন্তু কার্টুনটি প্রকাশের পর তা নিয়ে হাঙ্গামা শুরু হয়েছে। বলা হল, আমি না কি ইচ্ছে করে সেটা করেছি। অথচ এর পরদিনই আমি পত্রিকার ১ম পাতায় ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছিলাম।

শিরিন দালভি বলেন, ক্ষমা চাওয়ার পরও আমার ও পত্রিকার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হল। আমাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আমার বাড়ির সামনে অনশন-ধর্মঘট শুরু হয়েছে। মুম্বাই পুলিশ আমাকে আটক করেছিল; তবে আমি আদালতে জামিন পেয়েছি। কিন্তু এখনও নানা জায়গায় অজস্র মামলা ঝুলছে।

শুরুতে সম্পাদকের পাশে দাঁড়ালেও বিক্ষোভের ভয়ে মহারাষ্ট্রে আওয়াধনামা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন পত্রিকা কর্তৃপক্ষ।

গত ৫ বছর আগে স্বামীকে হারানো পর থেকে নিজের আয়ে সংসার ও সন্তানদের খরচ বহন করছেন শিরিন দালভি। পত্রিকা বন্ধ হওয়ায় তিনি এখন আর্থিক সঙ্কটে রয়েছেন।

নবীর কার্টুন পুনঃপ্রকাশ করাটা ভুল ছিল। তবু সংবাদের স্বার্থেই ওই কার্টুন প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বল দাবি করেন শিরিন দালভি।

তিনি বলেন, সংবাদের অংশ হিসেবে ওই কার্টুনটি প্রকাশ করা হয়েছিল। যেকোনো সংবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছবি দেওয়া হয়। এই কার্টুনের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল।

শিরিন দালভি বলেন, ধর্মীয় হাঙ্গামা বাঁধানোর উদ্দেশে এটি করা হয়নি। আমি নিজেও একজন মুসলিম। আমার ধর্মের লোকদের অনুভূতিতে আঘাত লাগে; এমন কাজ আমি কেন করবো?

কিন্তু মহারাষ্ট্রের একাধিক কট্টরপন্থী মুসলিম সংগঠন তার যুক্তি মানতে রাজি নয়, এফআইআর প্রত্যাহার করছে না তারা।