দীর্ঘ ২৮ বছর পর নতুন ধরনের কিছু অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন একদল মার্কিন গবেষক। এগুলোর মধ্যে এমন কিছু অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে, যা বহু প্রচলিত ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ যেমন— টিউবারকিউলোসিস, সেপটিকেমিয়া প্রভৃতি নিরাময়ে ব্যবহার করা যাবে। নতুন এ অ্যান্টিবায়োটিকের নাম দেয়া হয়েছে টেইক্সোব্যাকটিন। খবর বিবিসি, দ্য টেলিগ্রাফ।
ম্যাসাচুসেটসের নর্থ-ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক অ্যান্টিবায়োটিকগুলো আবিষ্কার করেন। গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক কিম লুইস সাম্প্রতিক অগ্রগতিকে ‘যুগান্তকারী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা প্রায় ২৫টি নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করেছি। সব ক’টির ক্ষেত্রে একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। আর এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হলো টেইক্সোব্যাকটিন।” তিনি আরো জানান, যে বিশেষ প্রক্রিয়ায় এগুলো উদ্ভাবন করা হয়েছে, তা অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের ক্ষেত্রে এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এর মাধ্যমে নতুন আরো অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গবেষকদের ধারণা ছিল, নতুন ও কর্মক্ষম অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের মূল উত্স মাটি। কারণ অন্যান্য জীবাণুর মোকাবেলা করার জন্য ব্যাকটেরিয়া প্রতিনিয়তই নিজেদের গঠনে পরিবর্তন আনে এবং উন্নত হয়ে ওঠে। কিন্তু শতকরা ৯৯ ভাগ জীবাণু পরীক্ষাগারের কৃত্রিম পরিবেশে তৈরি করা সম্ভব হচ্ছিল না বলে গবেষকরা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। ফলে মানুষের প্রাণরক্ষাকারী ওষুধ উদ্ভাবন অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণার ফল এ নিরাশার পালে আবার আশার সঞ্চার করেছে। এখন অনুমান করা হচ্ছে, নতুন এসব অ্যান্টিবায়োটিক জীবাণু প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।
অধ্যাপক কিম লুইসের তত্ত্বাবধানে গবেষকরা এমন একটি নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, যা মিশ্রিত যৌগকে মাটিতে অবস্থিত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণকণা থেকে আলাদা করে রাখতে সক্ষম। ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের অধ্যাপক লরা পিডক বলেন, ‘এ পদ্ধতি অভিনব। ফলে অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের ক্ষেত্রে নতুন নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হতে যাচ্ছে বলে আমার ধারণা।’
উল্লেখ্য, পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কৃত হলেও ১৯৮৭ সালের পর এক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। সাম্প্রতিক এ আবিষ্কারের সব তথ্য ‘ন্যাচার’ নামক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। বণিকবার্তা।