Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

cancer-checkmark-horizবিজ্ঞান যতই অগ্রসর হোক, এখনো cancer has no answer! এই ধ্রুব সত্য প্রমাণিত কোরিয়া, আইসল্যান্ড বা প্রায় দেশে। এরই সঙ্গে আরও একটা সত্য প্রমাণিত, বিভিন্ন প্রকারের ক্যান্সারের মধ্যে ১০ রকমের ক্যান্সার শুরুতেই ধরা পরলে মৃত্যুর হাত থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

বিশ্বের প্রথম সারির চিকিত্‍সকের একটি দল ১৫ বছর (১৯৯৫-২০০৯) ধরে ৬৭টি দেশের আড়াই কোটি ক্যান্সার আক্রান্তদের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন। সমীক্ষার ফল, মরণ রোগের হাত থেকে বেঁচে বেরিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কেবল ভারত এই বিষয়ে পিছিয়ে। যদিও আশ্চর্যের বিষয়, ভারতে ক্যান্সারের চিকিত্‍সায় যথেষ্ট উন্নত!

chardike-ad

এই দেশে পাচনতন্ত্রের ক্যান্সারের চিকিত্‍সার পর পাঁচ বছর বেঁচেছেন এমন রোগীর সংখ্যা অনেকটাই কম। যেমন, মাত্র ১৯ শতাংশ রোগী স্টম্যাক ক্যান্সারের মৃত্যুর থাবা এড়াতে পেরেছেন। যেখানে অন্যান্য দেশে এর হার ২৫-৩০ শতাংশ। এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় এর হার প্রায় ৫৮ শতাংশ। কোলন ক্যান্সার থেকে সুস্থ হচ্ছেন ৩৭ শতাংশ।

সেখানে অন্য দেশে ৫০-৫৯ শতাংশ এবং মার্কিন মুলুকে এর হার প্রায় ৬৫ শতাংশ। লিভার ক্যান্সার ধরা পরার পর পাঁচ বছর বেঁচেছেন ৪ শতাংশ। অন্য দেশে সেই পরিসংখ্যান ১০-২০ শতাংশ। আর রেক্টাল ক্যান্সার থেকে জীবন-পথে ফেরার সংখ্যা নগণ্য।

এমনকী, প্রাথমিক অবস্থায় ব্রেস্ট ও প্রস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়লে উন্নত চিকিত্‍সা ব্যবস্থার সৌজন্যে যেখানে বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলির প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠেন সেখানে ভারতের অগ্রগতি মাত্র ৬০ শতাংশ। এছাড়া, ওভারিয়ান ক্যান্সারে বেঁচে থাকার হার ১৯৯৫-৯৯-এ ছিল ১৪%। ২০০৫-০৯ সালে সেটা বেড়ে হয়েছে ২৩ শতাংশ। গোটা বিশ্বে সারভাইক্যাল ক্যান্সারে বেঁচে থাকার হার ৫০%। ২০০৫ সালে ৪৭% থেকে কমে ভারতে সেই হার এখন ৪৬%।

এই বিষয়ে লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন-এর অধ্যাপক মিশেল কোলম্যান মনে করেন, ভারতে সব ক্যান্সার রোগ প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে না। এবং তারা উপযুক্ত চিকিত্‍সাও পায় না। এই মুহূর্তে ক্যান্সারের সবচেয়ে উন্নত চিকিত্‍সা হয় মুম্বাইয়ে।

কিন্তু বহু ভারতীয়ই সেই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। তাই এই দেশে মৃত্যুর হার তুলনায় বেশি। তিনি আরও বলেছেন, শুধু ভারতেই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও গ্রেট ব্রিটেন-সহ অনেক উন্নত দেশেই চিকিত্‍সা ব্যবস্তার এই বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়।

বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল ক্যান্সার রেজিস্ট্রি প্রোগ্রাম-র অধিকর্তা এ নন্দকুমারের মতে, এখানকার রোগীরা চিকিত্‍সকের চিকিত্‍সা-প্রণালী বা বিধি-নিষেধ অক্ষরে অক্ষরে মানতে পারেন না অথবা মেনে চলেন না। আমাদের দেশে ক্যান্সারে আক্রান্তরা কম বাঁচেন এই একটি কারণেও। উল্লেখ্য, নন্দকুমার আগে উল্লিখিত সমীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার আরও বক্তব্য, বেশ কিছু আর্থ-সামাজিক কারণ যেমন, অর্থনৈতিক অবস্থা, রোগের প্রকৃতি, নির্ধারিত সময়ে চিকিত্‍সা এবং চিকিত্‍সার প্রয়োজন সম্পর্কে সচেতনতার অভাব– রোগীর মৃত্যুর হার বাড়াচ্ছে।

তা হলে কি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত অন্য দেশের তুলনায় সত্যিই পিছিয়ে পড়ছে?

কোলম্যানের জবাব, প্রতিদিন ভারতে কত সংখ্যক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সেটাই নথিভুক্ত হচ্ছে না। ফলে ক্রম বর্ধমান এই ক্যান্সার রোগীদের চিকিত্‍সাও ঠিক মতো হচ্ছে না। একজন রোগী সম্বন্ধীয় তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ নথিভুক্ত করার জন্য কর্মী এবং সরঞ্জাম-সহ রেজিস্ট্রেশনের মোট খরচ একটি বুকের এক্স-রের খরচের তুলনায় কিন্তু অনেকটাই কম। সবটাই সম্ভব হবে যদি বিষয়টির পিছনে রাজনৈতিক সমর্থন মেলে।