পুরস্কারের ধারণাটির সঙ্গে শৈশব থেকে প্রায় সবাই কমবেশি পরিচিত। পুরস্কার যে শুধু সম্মান আর স্বীকৃতি তা নয়, প্রণোদনাও। পুরস্কার প্রাপ্তির অনুভূতি কাজের প্রতি উত্সাহ ও দায়িত্ববোধ বাড়িয়ে দেয় অনেক গুণ। বলা হয়ে থাকে, কোনো সভ্যতার উত্কর্ষের অন্যতম পরিমাপক হলো এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকদের রন্ধনশিল্প ও রান্নার মুন্সিয়ানা। রান্নায় উত্কর্ষের স্বীকৃতি দিতে প্রচলিত একটি আন্তর্জাতিক মানের পুরস্কার হলো ‘ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ড’।
‘ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ড’ নাম শুনেই অ্যাওয়ার্ডের বিষয়বস্তু আন্দাজ করা সম্ভব। এটি হচ্ছে ব্রিটিশ কারি শিল্প নিবেদিত বার্ষিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান, যেখানে শুধু রেস্তোরাঁ শিল্পে যারা অবদান রেখেছেন, তাদের পুরস্কৃত করা হয়। ২০০৫ সাল থেকে নিয়মিত অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠান এখন রন্ধনশিল্পীদের কাছে আরাধ্য একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পুরস্কারের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পায় সাধারণ নাগরিকদের রসনা তৃপ্তিতে অবদান রাখা মসলাদার খাবার পরিবেশকরা। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হলো, সেসব রেস্তোরাঁই মনোনয়ন পাবে, যারা বাংলাদেশী, ভারতীয়, পাকিস্তানি, শ্রীলংকান ও নেপালি খাবার পরিবেশন করে। রসনা তৃপ্তিতে এশীয় রন্ধন প্রণালির জয়জয়কার সবসময়, আর তাই শর্ত হিসেবে এটা যথার্থই বটে।
অন্যদিকে বলা যেতে পারে, ইউরোপের জনপ্রিয় অধিকাংশ মসলাদার খাবারের রেস্তোরাঁ এশিয়ার খাবারগুলোর জন্যই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ইংল্যান্ডসহ পুরো ইউরোপের অর্থনীতিতে খুব ভালো রকম অবদান রাখছে যে শিল্পটি, সেটি হলো রেস্তোরাঁর ব্যবসা। কাজেই এ শিল্পের মূল্যায়ন না করলে কীভাবে হয়। ২০১৪ সালে এসে ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ড এক দশকে পদার্পণ করল। বরাবরের মতো এবারের আয়োজনও করা হয়েছিল লন্ডনের ব্যাটারসি এভলুশনে। যথেষ্ট আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবারের অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান। এ বছর ২ লাখ ৬ হাজার ৩৭৮ জন ভোক্তার রায়ে মনোনয়ন পায় ২ হাজার ৬৪১টি রেস্তোরাঁ। মজার ব্যাপার হলো, এবারের ১৩টি পুরস্কারের মধ্যে সাতটিই বাংলাদেশী রেস্তোরাঁ উদ্যোক্তাদের ঘরে গেছে। সাফল্যের গল্পটা এখনো শেষ হয়নি। কেননা আজীবন সম্মাননা পুরস্কার জিতেছেন বাংলাদেশে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী সামসুদ্দিন খান। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তেরেসা মে ইউরোপে রেস্তোরাঁ শিল্পকে এ অবস্থানে নিয়ে আসার পেছনে অভিবাসীদের অবদান মুখ্য বলে অভিহিত করেছেন। বণিকবার্তা।