ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের জলন্ধরে সেই গুরুর দেহ এখনো ফ্রিজে রয়ে গেছে।
জলন্ধরের কাছে নুরমহলে দিব্য জ্যোতি জাগৃতি সংস্থান। মোট সম্পত্তির পরিমাণ কয়েক শ’ কোটি টাকা। আশ্রমের প্রধান গুরু আশুতোষ মহারাজ। গুরুর মৃত্যু হয়েছে প্রায় এক বছর আগে, গত ২৯ জানুয়ারি। কিন্তু শিষ্যরা মানতে রাজি নন। তাদের দাবি, ‘সমাধিতে’ রয়েছেন গুরুজি। জেগে উঠবেন সময় হলেই। আর সেই প্রতীক্ষায় দেহ রাখা রয়েছে বিরাট ডিপ ফ্রিজের ভিতর। ঠিক যেমন হয়েছিল ১৯৯৩ সালে বালক ব্রহ্মচারীর সুখচর আশ্রমে। তবে সেবার ৫৫ দিনের মাথায় পুলিশ দিয়ে পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার করে অন্ত্যেষ্টি করা গিয়েছিল। এবার প্রায় বছর ঘুরতে চললেও দেহ উদ্ধার নিয়ে দোলাচলে প্রশাসন। আদালত ১৫ ডিসেম্বর অন্ত্যেষ্টির সময়সীমা বেঁধে দেয়ার পরও।
২৯ জানুয়ারি চিকিৎসকরা গুরুজিকে ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ ঘোষণা করলেও ভক্তরা মানতে রাজি হননি। তাই দেহ সৎকারেও রাজি নন। ডিপ ফ্রিজে দেহ ঢুকিয়ে আশ্রমের বাইরে অবরোধ তৈরি করা হয়েছে। রামপালের মতোই আশুতোষ মহারাজের শিষ্যরা গড়েছেন নিজস্ব বাহিনী। প্রবেশপথে কড়া তল্লাশি করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের সেখানে প্রবেশ নিষেধ।
আশুতোষ মহারাজ ওরফে মহেশ কুমার ঝায়ের অন্ত্যেষ্টি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে গত এপ্রিলে আদালতের দ্বারস্থ হন পুত্র দলীপকুমার ঝা। দাবি করেন, পিতার অস্থি তার হাতে তুলে দেয়ার জন্য। আবার সঙ্ঘগুরুর গাড়িচালক পুরণ সিং মহারাজের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে সিবিআই তদন্ত দাবি করে হাইকোর্টে আর্জি জানান। প্রথম মামলার প্রেক্ষাপটে ১৫ দিনের মধ্যে আশুতোষ মহারাজের অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন্ করতে পাঞ্জাব প্রশাসনকে নির্দেশ দেয় পাঞ্জাব হরিয়ানা হাই কোর্ট। আদালতের নির্দেশমতো মঙ্গলবার আশ্রমে যান তিন পুলিশ কর্তা। কিন্তু তাদের ঢুকতেই দেননি আশ্রমের নিরাপত্তারক্ষীরা।
সাম্প্রতিক অতীতে রামপাল আশ্রমের ঘটনায় শিক্ষা নেয়া পাঞ্জাব পুলিশ আগে থেকে এখন সাবধানী। ওই ঘটনায় প্রাণ গেছে ছয়জনের। দিব্যজ্যোতি জাগৃতি সংস্থানে তার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তার জন্য সতর্কতা নিচেছ পুলিশ। পাঞ্জাব পুলিশের প্রধান সুমেধ সিং সাইনি মঙ্গলবারই এ ব্যাপারে বৈঠক করেন দিব্যজ্যোতি আশ্রমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে, যাতে আইনি প্রক্রিয়ায় বাধা না পড়ে৷ কিন্তু তার পরও নিট ফল শূন্য!