চট্টগ্রামে ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৮৭ রানে হারিয়ে ১-০ তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
ব্যাট হাতে শতক হাঁকানোর পর এবার বল হাতে ৪ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়েকে ভালোই নাকানি চুবানি খাওয়ালেন সাকিব আল হাসান। সিকান্দার রাজা ও ভুসি সিবান্দার গুরুত্বপূর্ণ ২টি উইকেটের পর সোলেমান মিরকেও সাজঘরে পাঠিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। ৩৬তম ওভারে মিরকে বোল্ড করার পরের ওভারে পানিয়াঙ্গারাকে ফিরিয়েছেন আরাফাত সানি।
এর আগে ব্রেন্ডন টেলরের পর এলটন চিগাম্বুরাকেও আউট করে সিরিজরে প্রথম ওয়ানডে জয়ের সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল করলেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি। প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে ১৫ রানে সাব্বিরের ক্যাচে পরিণত করেনে তিনি। ৩৪ ওভার শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ১৬০/৬।
টেস্ট সিরিজের রান খরা কাটিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে তার অর্ধশতকেই ২৮১ রান তাড়া করে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল সফরকারীরা। তবে তার ৫৪ রানের আশাজাগানিয়া ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটিয়েছেন টাইগার দলপতি মাশরাফি। ৩০তম ওভারে মাশরাফির করা ৪র্থ বলে উইকেটের পেছনে ডান পাশে শূন্যে ঝাঁপিয়ে টেলরের ক্যাচটি গ্লাভসবন্দী করেন মুশফিক।
এর আগে মাসাকাদজার পর রেজিস চাকাব্বাকেও সাজঘরে ফেরান মাহমুদুল্লাহ। ২৫তম ওভারের চতুর্থ বলে চাকাব্বাকে ব্যক্তিগত ৯ রানে সরাসরি বোল্ড করেন এই স্পিনার। ২৫ ওভার শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ তখন ১২৪/৩।
এর আগে বাংলাদেশের জন্য ক্রমেই বিপদজনক হয়ে ওঠা হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান মাহমুদুল্লাহ। সফরকারীদের ইনিংসের ১৭তম ওভারে ৪২ রানে মাসাকাদজাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ তখন ৯২/৩।
এর আগে চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ২৮২ রানের জবাবে দাপুটে শুরু করেছিল জিম্বাবুয়ে। ৬ ওভার শেষে সফরকারীদের সংগ্রহে ছিল বিনা উইকেটে ৪৫ রান। তবে ৮ম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন সাকিব। ওভারের তৃতীয় বলে সিকান্দার রাজা (১৫) ও পঞ্চম বলে ভুসি সিবান্দাকে (০) সাজঘরে পাঠান এই ম্যাচে শতক হাঁকানো সাকিব। ৮ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের রান ছিল ৪৮/২।
এর আগে অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের সেঞ্চুরি, মুশফিকুর রহিমের অর্ধশতক ও অভিষিক্ত সাব্বির রহমানের ঝড়ো ৪১ রানের সুবাদে ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ২৮১ রান করে টাইগাররা।
৯৯ বলে ১০১ রান করেন সাকিব। দুইবার ‘জীবন পাওয়া’ মুশফিক ৭২ বলে করেন ৬৫ রান। আর শেষের দিকে অভিষিক্ত সাব্বিরের ২৫ বলে ৪৪ রানের ইনিংসটি ছিল এক কথায় দুর্দান্ত।
৭০ রানে ৪ উইকেট পতনের পর ইনিংসের হাল ধরেন সাকিব ও মুশফিক। ৫ম উইকেট জুটিতে ১৪৮ রান তুলে দলকে নিরাপদ সীমায় পৌঁছে দেন এ দুই ব্যাটসম্যান।
২১৮ রানের মাথায় পানিয়াঙ্গারার বলে তুলে মারতে গিয়ে সীমানায় কামুঙ্গুজির তালুবন্দী হন সাকিব। তবে তার আগেই শতক পূর্ণ করে দলকে দিয়ে যান একটা ভিত্তি।
আর এ ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আরও কিছুক্ষণ ব্যাট করে যান মুশফিক। ৪৭ ওভার ২ বলের সময় মুশফিক যখন আউট হন বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ২৪৬ রান।
পরে উইকেটে আসেন সাব্বির রহমান। ৩ ছয় আর ৩ চারে সাজানো ২৫ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন এ ডানহাতি।
দুপুরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৩০ রানের মধ্যেই স্বাগতিকরা হারায় তিনটি উইকেট।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে পানিয়াঙ্গারার বলে বোল্ড হয়ে ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন তামিম। দলের রান তখন মাত্র ৮।
ইনিংসের দশম ওভারে ২৬ রানের মাথায় চাতারার বল তুলে মারতে গিয়ে চিগুম্বুরার হাতে বল তুলে দিয়ে মাঠ ছাড়েন এনামুল হক (১২)। এরপর ৩১ রানে আবারও আঘাত হানেন চাতারা। ১২তম ওভারে চাতারার বলে ১ রান করে মাঠ ছাড়েন মাহমুদুল্লাহ। বিপর্যয়ে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
খানিক বাদে ৭০ রানের মাথায় ৩১ রান করে মমিনুল হক ফিরে গেলে হতাশা পেয়ে বসে বাংলাদেশের সমর্থকদের। তবে সাকিব আর মুশফিক মিলে সেই হতাশা কাটান।
৬৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের সফল বোরার পানিয়াঙ্গারা। চাতারা ২টি এবং নিউম্বু ও কামুঙ্গজি নেন ১টি করে উইকেট।