তিন বছর পর নিজের তৃতীয় টেস্ট শতকটি একটু অন্যভাবেই উদযাপন করলেন সাকিব আল হাসান। সাধারণত সেঞ্চুরির পর ব্যাটসম্যানরা যেভাবে ব্যাট তুলে ‘তিন অঙ্ক’ উদযাপন করেন, তার থেকে একেবারেই আলাদা ছিল তাঁর উদযাপনটি। ব্যাট না তুলে উল্টো তা মাটিতে রেখে দুই হাতের আঙুল দিয়ে তৈরি করলেন হৃদয়, আর তা গ্যালারির দিকে দেখিয়ে শতকটি উৎসর্গ করলেন তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী, শিশিরকেই। বিয়ের পর এটি যে সাকিবের প্রথম শতক। আর এই বিশেষ মুহূর্তে শিশিরকে সাকিব দৃশ্যপটে নিয়ে এলেন দারুণ এক উদযাপন-ভঙ্গিতেই।
বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় আর্জেন্টাইন তারকা অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়াকে দুই হাতের আঙুল এক জায়গায় নিয়ে এসে ‘হৃদয়’ বানাতে দেখেছেন এ দেশের ক্রীড়াপ্রেমীরা। ইউরোপীয় ফুটবলে কিছু দিন আগে এই ভঙ্গিতে গোল উদযাপান করেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা গ্যারেথ বেল। এই দুজনই গোলের পর আঙুল দিয়ে হৃদয় তৈরি করে উদযাপনটিকে বিখ্যাত করে দিয়েছেন। কিন্তু ক্রিকেটে সম্ভবত এই প্রথম এমন উদযাপন করলেন কেউ। কে জানে, সাকিবের এই উদযাপন-ভঙ্গিতে ক্রিকেটে নতুন কোনো ধারার জন্ম দিল কিনা!
২০১১ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাকিব খেলেছিলেন ১৪৪ রানের দারুণ এক ইনিংস। এরপর একবার এই খুলনাতেই নার্ভাস নাইন্টিজের শিকার হওয়া (২০১৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯৭) ছাড়া টেস্ট সেঞ্চুরিটি যেন আসছিলই না। তিন বছর পর পাওয়া সেঞ্চুরিটা তাই সাকিবের জন্য হয়ে থাকল বিশেষ কিছুই। আর বিশেষ কিছুতে ‘বিশেষ জনে’র কথাই তো সবচেয়ে আগে খেয়াল আসে। বিশেষ এই সেঞ্চুরিটি তাই সাকিব স্মরণীয় করে রাখলেন তাঁর স্ত্রীকে উৎসর্গ করেই।
আজকের সেঞ্চুরিটির জন্য ভীষণ মরিয়া দেখাচ্ছিল সাকিবকে। ৮০ থেকে ৯৯-এর ঘরে সাতটি ইনিংস আছে তাঁর। এর আগে সাকিবের নামের পাশে মাত্র দুইটি টেস্ট সেঞ্চুরি তাই সত্যি বেমানান দেখাচ্ছিল। নব্বইয়ের ঘরে তিনবার আউট হয়েছেন বলেই আজ ছিলেন ভীষণই সতর্ক। শুধু সেঞ্চুরি পাচ্ছিলেন না বলেই নয়, স্ত্রীর জন্য বিশেষ একটা উদযাপন অনেক আগে থেকে ছক করে রেখেও সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছিল না বলেই হয়তো আজ এমনই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন সাকিব।